Sunday, 5 December 2021

প্রদীপ দত্ত কে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মিছিল শিলচরে

নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলচর, ০৪ ডিসেম্বরঃঃ-
আজ শিলচরে প্রদীপ দত্ত রায়ের বিনাশর্তে মুক্তির দাবিতে নাগরিকদের পক্ষ থেকে মিছিল ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। 
দুপুর ১২ টায় শিলচরের নরসিংটোলা ময়দান থেকে বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক জনগণ ভাষিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, ১৯৬১ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের চাপে তৎকালীন কেন্দ্র সরকারের নির্দেশে আসাম সরকারের ভাষা আইনে আনা সংশোধনী মতে বরাক উপত্যকার তিন জেলার সরকারি কাজে বাংলা ভাষা প্রয়োগের দাবিতে ও ভাষিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনকারী প্রদীপ দত্ত রায়কে   ব্রিটিশ সরকারের সময়ে তৈরি হওয়া দেশদ্রোহীতা আইনে মিথ্যা মামলা রুজু করে গ্রেফতার করে জেলে বন্দি করার প্রতিবাদে ও তাঁর মুক্তির দাবিতে মিছিল করে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সহ - সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী ইমাদ উদ্দিন বুলবুল বলেন একাদশ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আইন মোতাবেক জেলা প্রশাসনকে কাজ করার দাবি কোনো ভাবেই দেশদ্রোহীতা হতে পারে না। তিনি এও বলেন যে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন যে এই আইনের যথেচ্ছ অপপ্রয়োগ হচ্ছে। প্রদীপ দত্ত রায়ের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সেখানে উপস্থিত আমরা বাঙালি দলের নেতা ও সি আর পি সি সি, আসাম এর কো-চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্হ বলেন যে বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বাধীন আসাম সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির মদতে পরিচালিত হচ্ছে। রাজ্যের ভাষিক সংখ্যালঘুদের মাতৃভাষা আজ বিপন্ন। ১৯৬১, ১৯৭২ ও ১৯৮৬ সালে আত্মবলিদানের মধ্য দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিলেন বরাক  উপত্যকার জনগণ কিন্তু বর্তমান সরকার উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তিগুলোর মদতে সেই অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। বরাক উপত্যকার মাতৃভাষা প্রেমী জনগণের এখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়। তিনি সবাইকে আহবান জানিয়ে বলেন সরকারের ফ্যাসীবাদী চরিত্রকে ঘরে বসে নিন্দা জানালে চলবে না, ভাষা আন্দোলনের শহিদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অধিকার রক্ষার আন্দোলনে যোগ দিতে হবে। ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি'র পক্ষে অরিন্দম দেব বলেন যে এই আন্দোলন কোনো ভাষার বিরুদ্ধে নয়, এই আন্দোলন মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। প্রদীপ দত্ত রায়কে তিনি নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে আগামীতে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার দাবি জানান। বিক্ষোভ শেষে একটি স্মারকপত্র আসামের রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে জেলাশাসক মারফত প্রদান করা হয়। সাধন পুরকায়স্হ, বিশ্বজিত দাস, ইমাম উদ্দিন বুলবুল, হিল্লোল ভট্টাচার্য, অরিন্দম দেব, জয়দীপ ভট্টাচার্য, তানিয়া লস্কর প্রমুখ স্মারকপত্রটি জেলাশাসকের অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত উপায়ুক্ত দীপক জিডুং এর হাতে তুলে ধরে দাবি জানান যে প্রদীপ দত্ত রায়কে বিনাশর্তে মুক্তি দিতে হবে, শিলচরের উদিয়মান সাংবাদিক অনির্বাণ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১২৪ ( এ) ধারায় দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির মদতে পরিচালিত আসাম সরকারের ভাষিক আগ্রাসন রুখতে হবে। রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে প্রদান করা স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করেন প্রাক্তন উপাচার্য এবং সি আর পি সি সি, আসাম এর সভাপতি ড. তপোধীর ভট্টাচার্য, চেতনা সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষে বিশিষ্ট নাট্যকার আশীষ ভৌমিক, অগ্রণী ক্লাবের পক্ষে ভোলা চক্রবর্তী, রূপম সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষে সুভাষ বর্মন, এ আই ডি এস ও'র আসাম রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি হিল্লোল ভট্টাচার্য, ভাষা শহীদ স্টেশন দাবি কমিটির পক্ষে রাজীব কর, শ্রমিক সংগঠন সিটু'র জেলা সভাপতি সমীরণ আচার্য, আমরা বাঙালির পক্ষে সাধন পুরকায়স্হ, কোরাস সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষে বিশ্বজিত দাস, ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি'র পক্ষে অরুপ বৈশ্য, মার্চ ফর সায়েন্স এর পক্ষ থেকে কমল চক্রবর্তী, অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষে মানস দাস, বিপিএফ এর পক্ষে ঋষিকেশ দে, উজ্জ্বল পান্ডুলিপির পক্ষে তমোজিৎ সাহা, সারা বাঙালি যুব ছাত্র সংস্থার পক্ষে প্রবীর পাল, নারী মুক্তি সংস্থার পক্ষে স্নিগ্ধা নাথ, এ আই ডি ওয়াই ও এর পক্ষে প্রেমানন্দ দাস, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ওর্গেনাইজেশনের পক্ষে আফজাল হোসেন চৌধুরী, এন আই এস এ এর প্রজ্ঞা অন্বেষা, সারওয়ার জাহান, এ আই ডি এস ও'র পক্ষে গৌর চন্দ্র দাস, পল্লব ভট্টাচার্য, ১৯ শে মে উদযাপন কমিটির পক্ষে সুব্রত কর, বরাক ফোরামের দেবরাজ দাস, ইয়াসির পক্ষে দিলীপ কুমার সিংহ সহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তারা। 
সংবাদদাতা 
আপন লাল দাস ।

Thursday, 2 December 2021

বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল, ২০২১ বাতিলের দাবিতে স্মারকপত্র কনজিউমার্স এসোসিয়েশনের


নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলচর, ২ ডিসেম্বরঃঃ- বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল,২০২১ বাতিলের দাবিতে আজ সর্বভারতীয় প্রতিবাদ দিবসের অঙ্গ হিসেবে গোটা রাজ্যের সাথে শিলচরেও অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স এসোসিয়েশনের এর পক্ষ থেকে কেন্দ্রের শক্তিমন্ত্রীর নিকট ই-মেইল যোগে স্মারকপত্র প্রদান করা হয়। স্মারকপত্র উল্লেখ করা হয় যে এল বিল সংসদে গৃহীত হলে বিদ্যুৎ ক্ষেত্র পুরোপুরি বৃহৎ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাবে, ফলে সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সমস্যা সৃষ্টি হবে। 
স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় যে স্বাধীনতার পর বিদ্যুৎ পরিষেবাকে পণ্য হিসেবে বিবেচিত না করার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, তা অটল বিহারী বাজপাই এর নেতৃত্বে পরিচালিত এন ডি এ সরকার বিদ্যুৎ আইন, ২০০৩ সংসদে পাশ করে তা পরিবর্তন করে এবং তখন থেকেই বিদ্যুৎ খন্ডের বেসরকারিকরণের পথ প্ৰশস্ত হতে শুরু করে। যদিও তার পর বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বন্টনের ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে কমতে থাকে ফলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হতে শুরু হয়। বর্তমান বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল সংসদে পাশ হলে উভয় ক্ষেত্র পুরোপুরি চলে যাবে পুঁজিপতিদের হাতে। ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের অন্যতম দাবিও ছিল বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার করা কারণ কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যে বিদ্যুত ব্যবহার করেন তার মূল্য আকাশ ছোঁয়া হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট জোরালো দাবি জানানো হয় যে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল, ২০২১ বাতিল করতে হবে, সাধারণ নাগরিকের জন্য বিদ্যুতের মূল্য প্রতি ইউনিট এক টাকা ধার্য করতে হবে। কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বন্টনের ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া চলবে না ইত্যাদি। স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করেন দিলীপ নাথ, চাম্পালাল দাস, হিল্লোল ভট্টাচার্য, বিজিত কুমার সিংহ প্রমুখ।
সংবাদদাতা 
আপন লাল দাস।

Wednesday, 1 December 2021

কাটিগড়ার কাতিরাইলের করতিগ্রাম থেকে নিখুজ বছর তেরোর এক ছেলে

কাটিগড়া, ১ ডিসেম্বরঃঃ-  শিশু হারিয়ে যাওয়ার চব্বিশ ঘন্টা হয়ে যাওয়ার পরও কোনো সন্ধান মিলেনি। কাটিগড়া থানায় এজহার প্রদান করার পর কাটিগড়া থানার অছি নব কুমার সইকিয়া  হারিয়ে যাওয়া শিশুর বাড়িতে গিয়ে একাধিকবার খুঁজ নিয়েছেন কিন্তু এখনো মাত্র তেরো  বছর বয়সী অজয় সেন (স্বরূপ) এর কোনো সন্ধান মিলেনি। করতিপার গ্রামের সেন পরিবারের কোনো ধরনের শত্রু আছে বলে কারো জানা নেই। তাই শিশু স্বরূপ কে যে কেউ অপহরণ করবে এমন আশংখা কেউ প্রকাশ করেন নি।  
 কাটিগড়ার ছয় নং  জাতীয় সড়কে নানা ধরনের ডাকাতি, বাড়িতে ডাকাতি সহ ঘরের দরজা ভেংগে  চুরির ঘটনা আকছর সুনা যায় কিন্তু  শিশু অপহরণ  বা নিখুজের মত কান্ড শুনা যায় নি। কাতিরাইল চা বাগান এলাকার করতিপার গ্রামের মাত্র তেরো বছর বয়সী স্বরূপ গত মংগলবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ নিজেদের একটি গরু বাড়ি থেকে খেদে দিতে যায়। তার পর আর সে ফিরে নি ঘরে। সহজ সরল প্রকৃতির স্বরূপ কে তার মা বাড়ির পার্শ্ববর্তী এলাকায় ডাকা ডাকি করে কোনো সন্ধান না পেয়ে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত খুঁজতে খুঁজতে না পেয়ে কাটিগড়া থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত এজহার প্রদান করেন কাকা শ্যামল রঞ্জন সেন। এজহার পেয়ে কাটিগড়া থানার অছি নব কুমার সইকিয়া একাধিক বার  খুঁজ নিয়েছেন,  কিন্তু শিশু স্বরূপের কোনো খুঁজ এখনো পাওয়া যায় নি। 
-------------------------------------

Monday, 29 November 2021

এআইডিওয়াইও'র আসাম রাজ্য কমিটির দ্বিতীয় সম্মেলন গোয়ালপাড়ায় অনুষ্ঠিত

এ আই ডি ওয়াই ও'র  আসাম রাজ্য কমিটির দ্বিতীয় যুব সম্মেলন গোয়ালপাড়া শহরের ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাগৃহে গত ২৮ নভেম্বর (রবিবার) অনুষ্ঠিত হয়। 
সম্মেলনের শুরুতে সংগঠনের রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন এ আই ডি ওয়াই ও'র আসাম রাজ্য সভাপতি ওসমান গনি মোল্লা এবং গণ আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি অস্থায়ী শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন নস্কর, তমাল সামন্ত, সংগঠনের আসাম রাজ্য কমিটির সভাপতি ওসমান গনি মোল্লা, সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর, রাজ্য সম্পাদক তুষার পুরকায়স্থ, অফিস সম্পাদক শিশির কাকতি প্রমুখ। মাল্যদান পর্বের পর বেকারদের কর্মসংস্থান প্রদান, কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত সকল বেকারদের উপযুক্ত হারে বেকার ভাতা প্রদান, মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করা, বন্ধ কল-কারখানা চালু করা ইত্যাদি দাবিতে স্লোগানে মুখরিত একটি সুসজ্জিত মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পরিক্রমা করে পুনরায় সভাস্থলে জমায়েত হয়। সেখানে সংগঠনের সভাপতি ওসমান গনি সহ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সভাপতিমন্ডলীর পৌরোহিত্যে পরিচালিত সভায় সংগঠনের সদস্যরা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য তমাল সামন্ত। তিনি তার বক্তব্যে যুবকদের জাতি-বর্ণের  ঊর্ধ্বে উঠে উন্নত নীতি-নৈতিকতার ভিত্তিতে যুব আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রকাশ্য সম্মেলনের মুখ্য বক্তা এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের আসাম রাজ্য কমিটির সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জননেত্রী চন্দ্রলেখা দাস আসামে প্রকৃত যুব আন্দোলন গড়ে তুলতে  উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে বামপন্থার আদর্শে যুব আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি এও বলেন যে রাজ্যে শাসকশ্রেণী মানুষকে জাতের নামে, ধর্মের নামে, কখনো রাজ্যের নামে জনসাধারণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে চলেছেন। এই বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে যুব আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। 
 প্রতিনিধি সভায় মুল খসড়া  পাঠ করেন রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য জিতেন্দ্র চলিহা। এই খসড়া প্রস্তাবের উপর আলোচনার পর সংশোধনী সহ সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। এই সম্মেলনে সাইফুল ইসলামকে সভাপতি, বিরিঞ্চি পেগুকে সম্পাদক এবং বিজিত কুমার সিনহাকে অফিস সম্পাদক নির্বাচিত করে ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আসাম রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়। এই সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য নিরঞ্জন নস্কর‌ও। তিনি এদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনুসরণ করে উন্নত আদর্শের ভিত্তিতে প্রকৃত যুব আন্দোলন গড়ে তুলে যুবকদের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানের দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সর্বশ এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের পলিটব্যুরোর সদস্য প্রখ্যাত জননেতা অসিত ভট্টাচাৰ্য্যের আসামের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপটে যুবকদের যুব আন্দোলন গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করে একটি রেকর্ডিং বক্তব্য শোনানো হয়।

সংবাদদাতা
পরিতোষ ভট্টাচার্য

Saturday, 27 November 2021

শাহসুফি তেলিটিকরী রহঃ এর বার্ষিক ঈসালে সওয়াব মাহফিল ২৯ শে জানুয়ারি, প্রস্তুতি শুরু

হজরত তেলিটিকরী (রহঃ) এর ইন্তেকাল বার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল সম্পন্ন 

RTN Barak Live, কাটিগড়া, ২১ নভেম্বরঃ
পীরে কামিল শাহ সুফি  মুবাশ্বির আলী তেলিটিকরী (রহঃ) ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল সম্পন্ন হলো শনিবার। এদিন সকাল দশটা থেকে  বিভিন্ন খতম শরিফ আদায় সহ  জিকির আজকার, ওয়াজ-নসিহত ও দোয়া মোনাজাত সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে  বিকাল চারটায় মাহফিলের শেষ হয়। 
  কাটিগড়ার তেলিটিকর জামেয়া মুবাশ্বিরিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই দোয়া  মাহফিলে উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় তিনশতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। এই মাহফিলে  বক্তব্য রাখেন মাসিক সবুজ মিনার পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা আজিজুর হক। তিনি তার বক্তব্যে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (ছঃ) জীবনের নানধিক নিয়ে আলোচনা করেন। বলেন, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (ছঃ) কে সৃষ্টিগত ভাবে সকল ধরনের দোষমুক্ত করে সৃষ্টি করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে তিনি হযরত হাসান বিন ছাবিতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বিশ্বনবীর মতো কোনো সন্তান কে কেউ কোনো দিন গর্ভে ধারণ করেন নি। তিনি যেমন সৌন্দর্যে ছিলেন অদ্বিতীয় তেমনি আখলাক্বে হাসানাহ ও উত্তম আদর্শের অধিকারী ছিলেন। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ ছঃ কে নিয়ে  সাহাবায়ে কেরামের যে ধারণা ছিল তা সুস্পষ্ট ভাবে দলীল ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি। হজরত তেলিটিকরী (রহঃ) এর জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা পেশ করে বক্তব্য রাখেন জামেয়া মুবাশ্বিরিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সুহেল আহমদ কাজী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন হজরত মাওলানা মুফতি আব্দুস সুবহান, সোনাই আলীয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা সহিদ আহমদ বড়ভূইয়া প্রমুখ। হামদ ও নাত পরিবেশন করেন, মুবাশ্বিরিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা রায়হান আহমদ ও আশরফ আহমদ। এদিনের মাহফিলে পীরে কামিল শাহ সুফি  হজরত মুবাশ্বির আলী তেলিটিকরী (রহঃ) এর বিগত বছরের ঈসালে সওয়াব মাহফিলের আয়-ব্যয়ের হিসাব পেশ করা হয়।  পাশাপাশি ২০২২ সালের ঈসালে সওয়াব মাহফিল নিয়েও দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।  ২০২২ সালের ২৯ শে জানুয়ারি রোজ শনিবার দিবারাত্রি হজরত মুবাশ্বির আলী তেলিটিকরী (রহঃ) এর বার্ষিক ঈসালে সওয়াব মাহফিল আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মাহফিলে বিশেষ মোনাজাত করেন শাহসুফি আলহাজ্ব মঈন কাজী'। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ্ব কমরুল ইসলাম চৌধুরী, শামসুল ইসলাম, আলহাজ্ব আবুল ফজল লস্কর, মাওলানা আতিকুর রহমান, হাফিজ আব্দুল হালিম, মাওলানা আব্দুল মুনিম, হাফিজ আমিন উদ্দিন প্রমুখ। 

ছবিঃ- মাহফিলে বক্তব্য রাখছেন মাওলানা সুহানি আহমদ কাজী সাহেব, পাশের ছবিতে উপস্থিতির একাংশ।

Saturday, 27 March 2021

খলিলকে টিকেট না দিতে বিভিন্ন মাধ্যমে অফার দিয়েছিলেন গৌতমঃ- সুস্মিতা



গৌতম রায় জালি বিজেপি, হিমন্তের  সিণ্ডিকেট রাজের বিজনেস পার্টারঃ সুস্মিতা 

কাটিগড়া, ২৩ মার্চঃ- কাটিগড়া আসনে  খলিল উদ্দিন মজুমদার টিকেট না দিতে বহু প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল আমাকে। খোদ গৌতম রায়ের পক্ষ থেকে আমাকে অফার এসেছিল। কিন্তু আমি কাটিগড়া সহ গোটা কাছাড়ের সুষ্ঠু রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে খলিল উদ্দিন মজুমদার কে  টিকেট দিয়েছি।  দীর্ঘ আটবছর   খলিল উদ্দিন মজুমদার কাটিগড়ার জনগণের সুখে দুঃখে পাশে রয়েছেন । গৌতম রায় কে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে খলিলের। আজ কাটিগড়ায় নির্বাচনী প্রচারে এসে এভাবেই বক্তব্য রাখেন সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী সুস্মিতা দেব। তিনি বলেন, গৌতম রায় জালনোট। তিনি জালি বিজেপি। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সিন্ডিকেটের বিজনেস পার্টার। সিণ্ডিকেট রাজ ধরে রাখার জন্য হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তাদের টিকেট দিয়েছে। এরা জালনোটের মতো। খোদ গৌতম রায় টাকার বিনিময়ে টিকেট নিয়ে এসেছেন।  নির্বাচন পরে তিনি কলকাতা বা কাটলিছড়ায় চলে যাবেন। কাটিগড়া বাসী তার টিকির নাগাল পাবেন না। গৌতম বাবু নির্বাচিত হলে কাটিগড়া বাসী মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না। ব্যবসায়ীদের গোণ্ডা টেকস দিতে হবে। বিশ্বাস না হলে হাইলাকান্দির জনগণকে জিজ্ঞেস করার কথা বলেন তিনি। গত লোকসভায় সুস্মিতা দেব হেরেছিলেন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, খলিল বাবু জিতে গেলে সন্তোষ কন্যা নিযে বিজয়ী হয়েছেন বলে মনে করবেন।
 আজ তিনি মহাজোট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী খলিল উদ্দিন মজুমদারের পালে হাওয়া তুলতে  কাটিগড়ার ব্লকের অন্তর্গত নুননগর, কাটিগড়া, চৌরঙ্গী,  আমতলা বাজার, শ্রীপুর,  স্লোইচগেট বাজার ইত্যাদি স্থানে   পদযাত্রা সহ নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন। প্রায় প্রত্যেক সভায় তিনি বর্তমান বিজেপি সরকারের ব্যর্থতা সহ কংগ্রেসের পাঁচ গ্যারান্টি নিয়ে আলোচনা করেন। বলেন, পাঁচলক্ষ চাকরি, দুশো ইউনিট বিদ্যুৎ ফ্রি, মহিলাদের জন্য মাস প্রতি দুহাজার টাকা, কাগজকল পুনরায় চালু, সিএএ বাতিল ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কংগ্রেস।  এনআরসিতে যাদের নাম এসেছে তাদের নাগরিক বলে ঘোষণা দিবে কংগ্রেস। আর যারা বাদ পড়েছেন তাদের আবার আবেদন করার সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। আজকের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কংগ্রেসের মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখার্জি, মহাজোট প্রার্থী খলিল উদ্দিন মজুমদার, পেপার মিল রিভাইবেল একশন কমিটির সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তী, হুসেন আহমদ চৌধুরী,  ফয়ছল হক বড়ভুইয়া, পাপন দেব, সূর্যকান্ত সরকার, বিশ্বজিৎ মালাকার, প্রানেশ দেব, লিখিলেশ দেব, নির্ঝর দাস সহ জোট শরিক দলের নেতৃবৃন্দরা।

Wednesday, 17 March 2021

চল্লিশ বছরের দুই সম্প্রদায়ের ব্যালেন্স ট্রেডিশন ভেঙে নতুন চাল কংগ্রেসের


একসাথে কাটিগড়া-বড়খলায় সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়ে চমক, 

হারানো জমি ফিরে পাচ্ছেন সুস্মিতা 

RTN tv Live, কাটিগড়া, ১৭ মার্চঃ-  চল্লিশ বছর। এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে  আটটি বিধানসভা নির্বাচন। প্রত্যেকটা নির্বাচনে কাটিগড়ায় সংখ্যাগুরু থেকে প্রার্থী দেওয়া হলে বড়খলায়  সংখ্যালঘু থেকে প্রার্থী দিয়ে আসছে ভারতীয় জাতীয়  কংগ্রেস।   এই সুদীর্ঘ কালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস   এক অলিখিত নিয়মের মধ্য দিয়েই বড়খলা এবং কাটিগড়ায় প্রার্থী মনোনীত করতে দেখা গেছে। হরহামেশাই প্রার্থী চয়ন করতে গিয়ে এই নিয়মটি নজরে রেখেছে দলীয় নেতৃত্ব।   রাজনীতির 'র' বুঝেন এমন ভোটারদের মধ্যেও কংগ্রেসের এই নিয়ম বহুল চর্চিত। নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে কংগ্রেসের কাটিগড়ায় প্রার্থী কে হচ্ছেন, তার উপর পুরো মাত্রার নির্ভর করতো বড়খলার টিকেট প্রত্যাশীদের ভাগ্য।
 "সংখ্যালঘু বনাম সংখ্যাগুরু" দীর্ঘ চল্লিশ বছরের  এই ব্যালেন্স ট্রেডিশন ভেঙে একুশের মহারণে এই প্রথম কাটিগড়া এবং বড়খলায় একসাথে সংখ্যালঘু থেকে প্রার্থী দিলো কংগ্রেস।  কাটিগড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী করেছে খলিল উদ্দিন মজুমদারকে। পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ প্রাক্তন মন্ত্রী মিছবাউল ইসলাম লস্করকে দলীয় টিকেট ধরিয়ে দেওয়া হলো বড়খলায়। এর আগে ১৯৭৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একসাথে উভয় আসনে কংগ্রেস সংখ্যালঘু থেকে প্রার্থী দিয়েছিল। সেসময় কাটিগড়ায় কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন প্রয়াত আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। বড়খলায় ছিলেন লুৎফর রহমান। ১৯৮৩ থেকে ২০১৬ সাল।   এর মধ্যে    আটটি বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে রাজ্যে। প্রত্যেকটি নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্ব ঘুটির চালের মতো উভয় সম্প্রদায় থেকে দুই আসনে প্রার্থী দিয়ে আসছে। নেট দুনিয়ার ঘাটাঘাটি করলে দেখা যায়,  ১৯৮৩ সালের নির্বাচনে কাটিগড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন নেপাল চন্দ্র দাস । তখন বড়খলায় কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন আলতাফ হোসেন মজুমদার। ১৯৮৫ সালের নির্বাচনে এই দুজনকেই আবার প্রার্থী করে কংগ্রেস। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে কাটিগড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন নিহার রঞ্জন লস্কর। তখন বড়খলায় প্রথমবার কংগ্রেস টিকিট পান মিছবাউল ইসলাম লস্কর। এরপর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন হয় ১৯৯৬ সালে। সেসময় অনিল চন্দ্র দে কে কাটিগড়ায় এবং মিছবাউল ইসলাম লস্করকে আবার বড়খলায় প্রার্থী করা হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রদীপ নন্দী কাটিগড়ায় কংগ্রেসের জার্সিতে ভোট ময়দানে অবতীর্ণ হন। বড়খলায় আবারো মিছবাউল ইসলাম লস্করের উপর ভরসা রাখে কংগ্রেস। স্থানীয় প্রার্থীর জিগির তুলে ২০০৬ সালে কাটিগড়ায় কংগ্রেসের টিকিট পান প্রয়াত প্রদীপ পাল। বড়খলায় আবারো মিছবাউল ইসলাম লস্করকে টিকিট দেওয়া হয়। ২০১১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন বদরপুরের  বিধায়ক আনোয়ারুল হক কে কাটিগড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী করে।  বড়খলায় দলীয় টিকেট ধরিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি ত্যাগী ড. রুমি নাথকে। অনুরূপভাবে ২০১৬ সালের নির্বাচনে তৎকালীন বিধায়ক আতাউর রহমান মাঝারভূইয়া কে কংগ্রেস  প্রার্থী করে কাটিগড়ায়। বড়খলায় ড. রুমি আবারো দলীয় টিকেট পান । এই আটটি বিধানসভা নির্বাচনে উভয় আসনে  একসাথে একসম্প্রদায় থেকে কোনো দিন কংগ্রেস  প্রার্থী দেয় নি। এবারই প্রথম কাটিগড়া এবং বড়খলায় একসাথে সংখ্যালঘু থেকে প্রার্থী দিলো কংগ্রেস। কাটিগড়ায় জনসংযোগ রক্ষা করে যাওয়ার ফলে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন খলিলবাবু। বড়খলায় স্থানীয় প্রার্থীর দাবির প্রতি লক্ষ্য রেখেই আবার মিছবাউল ইসলাম লস্করকে জার্সি পরিয়ে মাঠে নামিয়েছে কংগ্রেস।   রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার প্রার্থী চয়নে কংগ্রেস  বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। আমজনতার হৃদয়ে থাকা ব্যক্তিকে দলীয় টিকেট দিয়ে কংগ্রেস মোক্ষম জবাব দিয়েছে শাসকদলকে। জনসমর্থন থাকা প্রার্থীদের কে মনোনয়ন  দেওয়ায় জোট থাকা সত্ত্বেও দলীয় অন্তর্কোন্দল তেমনটা পরিলক্ষিত হচ্ছে না আপাতত। আর এই চালে নিজের পায়ের তলার মাঠি অনেকটা মজবুত করে নিয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব। কাটিগড়ার খলিলের হয়ে মরণকামড় দিয়েছিলেন সুস্মিতা। যার পরিপ্রেক্ষিতে খলিল মজুমদার  টিকেট পেয়েছেন। একইভাবে  বড়খলায় পাপন দেবের হয়ে লড়াই করে শেষমেষ  মিছবাউল ইসলাম লস্করকে দলীয় টিকেট প্রদানে  রাজি হওয়ায় প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী সুস্মিতা দেবের উপর নানা অভিযোগ এনে সংখ্যালঘুরা মুখ ফেরাতে শুরু করেছিলেন। একুশের মহারণে কাটিগড়া এবং বড়খলায় উপযুক্ত প্রার্থী চয়ন করার ফলে হারানো জমি অনেক ফিরে পেতে পারেন সন্তোষ-কন্যা, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা।

ভোট ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ গৌতম-খলিলের, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইর ক্ষেত্র তৈরি কাটিগড়ায়

ভোট ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ গৌতম-খলিলের, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইর ক্ষেত্র তৈরি কাটিগড়ায়

RTN tv Live, কাটিগড়া, ১৭ মার্চঃ- দলীয় টিকেট নিয়ে সব জল্পনা কল্পনা শেষ।  কাটিগড়ার ভোট  ক্ষেত্র তৈরি।  জোট প্রার্থী  খলিল উদ্দিন মজুমদার। বিপক্ষে গেরুয়া জার্সিতে ভোট ময়দানে রয়েছেন প্রাক্তনমন্ত্রী গৌতম রায়। আছেন নবগঠিত অসম জাতীয় পরিষদের মনোনীত প্রার্থী সাধন সিংহা সহ নির্দল প্রার্থীও। এপর্যন্ত ভোটের যা হাওয়া,  দ্বিমুখী নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে কাটিগড়া।   জোট প্রার্থী খলিল উদ্দিন মজুমদার বনাম বিজেপির গৌতম রায়ের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। 
গত নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী জোট প্রার্থী খলিলের দিকেই পাল্লাভারি বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা ২০১৬ সালের নির্বাচনে  কংগ্রেস পেয়েছিল ১৫,৪১৮ ভোট। তৎকালীন  ইউডিএফ প্রার্থী খলিলের ঝুলিতে পড়েছিল  ৫০,৯৫৬ ভোট।  সেসময় বিজেপির অমর চাঁদ জৈন  ৫৯.৭৬৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন।  এবারে কংগ্রেস-ইউডিএফ একসঙ্গে ভোট খেলছে। জোট শরিক উভয় দলের প্রাপ্ত ভোট বিজেপির  চেয়ে প্রায় সাত হাজার বেশি। সেখান থেকেই দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে কাটিগড়া উদ্ধারের স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। একুশের ভোটার তালিকা অনুযায়ী  বর্তমানে কাটিগড়ায় মোট ভোটার ১,৮৭,২৫৩ ।  এক হিসাব মতে, কাটিগড়ায়  হিন্দু ভোট মুসলিম ভোটের চাইতে হাজার এক বেশি। যদিও সরকারিভাবে হিন্দু-মুসলিম বলে কিচ্ছু নেই তবে অন্য এক গ্রুপের দাবীমতে, কাটিগড়ায় হিন্দু ভোট প্রায় পাঁচ হাজার বেশি। আবার কাস্টিংয়ের দিক দিয়ে উভয় সম্প্রদায়ের ভোট প্রায় সমান হয়ে যায়। অন্তত বিগত নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করলে এমনটা তথ্য বেরিয়ে আসে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের, বিগত নির্বাচনগুলোর মতো এবারো  ধর্মীয় মেরুকরণ অনুযায়ী ভোট হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যদি হয়,  তাহলে গৌতম-খলিল উভয়ের চান্স ফিফটি ফিফটি। হারজিত হবে বড়োজোর  হাজার দশেক ভোটের ব্যবধানে। রাজনীতির কারবারিদের মতে, ভোট ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে  গৌতম-খলিলের কাছে। মুসলিম ভোটে ভাগ বসাতে পারলেই কেল্লাফতে করে আরও একবার নিজের জাত চেনাতে তেমন বেগ পেতে হবে না গৌতম বাবুর। অনুরূপ ভাবে হিন্দু ভোটের দিকেই পাখির চোখ রেখে এগিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস। তাতে ভাগ বসাতে পারলে দিসপুর যাত্রার স্বপ্ন দেখতে পারেন খলিলবাবুও।

নিজের মেয়ের জন্য পাত্রের ব্যবস্থা করুন, পরে না হয় কাটিগড়ার মা বোনদের দায়িত্ব নেবেন গৌতমবাবু

নেপাল দাস যখন নেতা ছিলেন তখন উনি তেনাও ছিলেন না

নিজের মেয়ের জন্য পাত্রের ব্যবস্থা করুন, পরে না হয় কাটিগড়ার মা বোনদের দায়িত্ব নেবেন

গৌতমের আলটপকা মন্তব্যের ক্ষমা চাইতে বললো কংগ্রেস 

RTN tv Live, কাটিগড়া ১৬ মার্চঃ- তপশিলি সমাজ সহ সর্বসাধারণের জনপ্রিয় নেতা  প্রয়াত নেপাল চন্দ্র দাস যখন নেতা ছিলেন তখন উনি হয়তো "তেনা"ও ছিলেন। নেপাল বাবু তাঁর নিজের যোগ্যতায় সাংসদ-বিধায়ক হয়েছিলেন। গৌতম রায় উনাকে নেতা বানান নি। নেপাল দাসকে গৌতমবাবু নেতা বানিয়েছেন বলে বুলি আওড়াচ্ছেন। এটা তপশিলি সমাজকে অপমানিত করার নামান্তর।  আজ কাটিগড়া ব্লক কংগ্রেস কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে গৌতম রায়ের বিরুদ্ধে এভাবেই আক্রমণ করলো  কাটিগড়া  কংগ্রেস।  

গত ১০ ই মার্চ সিদ্ধেশ্বরে এক  নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দিতে কাটিগড়ায় বিজেপি প্রার্থী গৌতম রায় বলেন, প্রয়াত নেপাল চন্দ্র দাস কে তিনি নেতা বানিয়েছিলেন।  তাঁর এই বক্তব্যে পছন্দ হয়নি কংগ্রেসের। আজ  কংগ্রেসের কাটিগড়া সমষ্টির ইনচার্জ পাপন দেব সহ অন্যান্য স্থানীয় দলীয় কর্মীদের পাশে রেখে কাটিগড়া ব্লক কংগ্রেসের ইনচার্জ সূর্যকান্ত সরকার বলেন,  জননেতা নেপাল চন্দ্র দাস নিজের যোগ্যতায় সাংসদ-বিধায়ক হয়েছেন। কেউ তাকে নেতা বানান নি। তিনি যখন জন নেতা ছিলেন তখন হয়তো গৌতম বাবু তেনাও ছিলেন না। তপশিলি সম্প্রদায়ের  জনপ্রিয় এই মহান নেতাকে নিয়ে গৌতম রায়ের বিরূপ মন্তব্য গোটা তপশিলি সমাজকে অপমানিত করেছে। এজন্য তিনি গৌতম রায়কে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেন। তিনি আরও বলেন, কাটিগড়ার মা-বোনদের নিয়ে গৌতম রায়  অপমানজনক মন্তব্য করেছেন। তার পরিবারের খোজ নিয়ে দেখুন, তিনি নিজে  যোগ্য পিতা হতে পারেন নি । তার নিজের মেয়েকে সঠিক পাত্রস্থ করতে পারেন নি।  কাটিগড়ার মা-বোনদের কি দায়িত্ব নেবেন তিনি। সূর্যকান্ত বাবু বলেন, একে অপরের বিরুদ্ধে কম বক্তব্য দেওয়া হয় নি কাছাড়ে। কিন্তু কোনোদিন কেউ কাউকে বিদ্রুপ করে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করেন না এখানকার নেতারা। কিন্তু গৌতম বাবু কাটিগড়ায় এসে তার এই পুরোনো আলটপকা মন্তব্য শুরু করে দিয়েছেন। তিনি নিজে যেখানে যান, একটা অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। কাটলিছড়া বাসি উনাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এবার কাটিগড়ায় এসেছেন লুটেপুটে খাওয়ার জন্য। তাই এই দুর্নীতিগ্রস্থ নেতা কে বয়কট করে কাটিগড়ার শান্তি সম্প্রীতি এবং উন্নয়নের স্বার্থে আগামী ১ ই এপ্রিল কংগ্রেস মনোনীত জোট প্রার্থী খলিল উদ্দিন মজুমদার কে ভোট দিয়ে জয়ী করার আহবান জানান তিনি। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কাটিগড়া ব্লক সেবাদলের চেয়ারম্যান নির্ঝর দাস, সাধারণ সম্পাদক মৃদুল নাগ,  শরফুল আলম চৌধুরী, জুনাইদ আহমদ মজুমদার প্রমুখ।

Saturday, 24 October 2020

চুপিসারে ৮৪৮ নং এলপি স্কুলের এসএমসি গঠন , ডিইইও'র দারস্থ অভিভাবকরা

 আরটিএন ডেস্ক,  পূর্বকাটিগড়া, ২৪ অক্টোবরঃ- পূর্বকাটিগড়ার দুধপুর ক্লাস্টারের অন্তর্গত ৮৪৮ নং লামার দুধপুর এলপি স্কুলের এসএমসি পূর্ণগঠনে গাইডলাইনের কোনো তোয়াজ করা হয় নি। ডাকা হয় নি সাধারণ সভাও।   এসংক্রান্ত কোনো চিঠিও ইস্যু করেন নি  সদস্য সচিব বিমলেন্দু সিনহা। তবুও গঠন করে নিয়েছেন পরিচালন সমিতি।   নিজের কুমতলব হাসিল করতে  চুপিসারে গঠিত এই পরিচালন সমিতি বাতিল করার দাবিতে  জেলা  প্রাথমিক শিক্ষা আধিকারিকের (ডিইইও) দ্বারস্থ হলেন স্কুলের  অভিভাবকরা। এ উদ্দেশ্য তারা মঙ্গলবার এক স্মারক পত্র তুলে দেন ডিইইও অফিসারের হাতে। স্মারক পত্রের কপি দেওয়া হয়েছে কাছাড়ের জেলা শাসককেও।
 ৮৪৮ নং লামার দুধপুর এলপি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক মায়াজ উদ্দিন চৌধুরী, ফরিজ উদ্দিন চৌধুরী,  আলা উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ স্মাক্ষরিত স্মারক পত্রে বলা হয়েছে, ৮৪৮ নং লামাদুধপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষিক তথা সদস্য সচিব  বিমলেন্দু সিনহা স্কুলের এসএমসি পুনর্গঠন করেছেন বলে পরস্পর  খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু তিনি পরিচালন কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে কোনো সাধারণ সভা আহবান করেন নি। এমনকি এ সংক্রান্ত কোনো চিঠিও তিনি ইস্যু করেন নি।  কবে, কোথায়, কিভাবে স্কুলের পরিচালন সমিতি পুনর্গঠন হলো তা জানেন না স্থানীয় জনগণ।   এসএমসি গঠনে গাইডলাইনের কোনো তোয়াজ না করে কিভাবে গঠিত হলো কমিটি, এমন প্রশ্নও উত্তাপন করে তারা।  অভিভাবক তথা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অন্ধকারে রেখে নিজের মনমর্জি মতো সাধারণ সভা দেখিয়ে এসএমসি গঠন করে নিয়েছেন বলে প্রধান শিক্ষিক বিমলেন্দু সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের। সুষ্ঠু সুন্দর পরিচালন সমিতি গঠন করতে এতো মাথাব্যথা কেন সদস্য সচিবের।  এতে কি মতলব রয়েছে তাঁর।  কার মদতে, কি উদ্দেশ্যে চুপিসারে পরিচালন কমিটি গঠন করে নিলেন সদস্য সচিব, তাঁরও জবাব চেয়েছেন অঅভিভাবকরা।    এলাকার অভিভাবক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদের অন্ধকারে রেখে গঠিত হওয়া   এসএমসি বাতিল করে  সাধারণ সভার মাধ্যমে নতুন এসএমসি গঠন করতে  প্রধান শিক্ষিককে নির্দেশ দিতে জেলা শাসক এবং ডিইইও এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযোগকারীরা।  অন্যথায় তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবেন। এব্যাপারে দুধপুর ক্লাস্টারের সিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। কাটিগড়া প্রাথমিক শিক্ষা খণ্ড আধিকারিক (বিইইও) এর সাথেও যোগাযোগ গড়ে তুলা যায় নি। 
এদিকে শুধু ৮৪৮ নং লামার দুধপুর এলপি স্কুল নয়, পূর্বকাটিগড়ার বেশিরভাগ এলপি স্কুলের এসএমসি পুনর্গঠনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উত্তাপন হয়েছে। একাংশ দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষিক তথা সদস্য সচিব চুপিসারে নিজের পছন্দ মতো লোককে সভাপতি করে পরিচালন সমিতি গঠন করে নিয়েছেন বলে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।  তাদের সঙ্গ দিচ্ছেন একাংশ সিআরসিরাও। ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যাহ্ন ভোজন, ইউনিফর্ম, স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে বরাদ্দ লক্ষ লক্ষ টাকায় পাখির চোখ থাকে একাংশ দুর্নীতিগ্রস্থ সদস্য সচিবদের। নিজের পছন্দ মতো পরিচালন সমিতির সভাপতি চয়ন করতে পারলেই স্কুলের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ টাকায় সহজে ভাগ বসানো যায়। তাই পরিচালন সমিতিতে নিজের পছন্দ মতো   লোক বসাতে হাটুজল খেয়ে মাঠে নামেন সদস্য সচিবরা, এমনই অভিযোগ  আমজনতার।

Tuesday, 20 October 2020

রাসূল (সা.) এর শুভ জন্মের তারিখ--আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী

বিশ্বের ধর্মপ্রাণ অগণিত মুসলমান রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখকে রাসূল (সা.) এর বরকতময় শুভ জন্মের দিন বলে বিশ্বাস করেন। গুরুত্ব সহকারে গরীব মিসকিনদেরকে সাদকা করেন। বিবিধ সাওয়াবের কাজ করেন, মাহফিলে মিলাদ ও আলোচনা সভা করেন।
গোপন কৌশলে যারা মুসলমানের অন্তর থেকে ইশকে রাসূল (সা.) বিদূরিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত তারা রবিউল আউয়াল মাসের ঐ দিনের গুরুত্ব হ্রাস করার কাজে বড় ব্যতিব্যস্ত থাকেন। তাদের অপ্রয়োজনীয় কষ্ট দূর করার মতো কোনো ঔষধ আমাদের কাছে নেই। তবে তাদের আরও বিচলিত করার মতো কাজে আশিকানে মুস্তফা যে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
গোপন কৌশল অবলম্বনে লিপ্ত ব্যক্তিদের প্রচেষ্টার মধ্যে একটি হলো, শুভ জন্মের তারিখ সম্পর্কে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি করে মুবারক দিনের গুরুত্ব হ্রাস করার চেষ্টা করা। তাই এ বিষয়ে কিছু তথ্য পেশ করা জরুরী মনে করছি। রাহমাতুল্লিল আলামীন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) এর শুভ জন্মের তারিখ যে সোমবার এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। এ বিষয়েও উলামায়ে কিরাম প্রায় একমত যে, যে মাসে রাসূল (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে মাসের নাম রবিউল আউয়াল।
ইসলামের সঠিক ইতিহাস যে সকল নির্ভরযোগ্য মুসলিম ঐতিহাসিকগণের মাধ্যমে সংরক্ষিত আছে, তাদের মধ্য থেকে অন্যতম কয়েকজনের উক্তি নিম্নে উদ্ধৃত হলো,
১) ইবনে জারীর যিনি প্রথম শ্রেণির মুফাসসীর বলে নিরীক্ষকগণের নিকট স্বীকৃত, তিনি তারীখে তাবারী ২য় খণ্ডে এ বিষয়ে সুচিন্তিত নিম্নরূপ অভিমত পেশ করেছেন, রাসূল (সা.) (আমুল ফিলে, অর্থাৎ যে বছর আবরাহা কা’বা শরীফ ধ্বংস করার জন্য এসেছিল) রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ জন্মগ্রহণ করেন।
২) আল্লামা ইবনে খালদুন যিনি ইতিহাস ও দর্শন বিষয়ের ইমাম বলে সুপরিচিত। তিনি তারিখে ইবনে খালদুন ২য় খ-ে এ বিষয়ে লিখেছেন, আমুল ফিলে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ রাসূল (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। পারস্যের সম্রাট নওশেরওয়ার রাজত্বকালের চল্লিশতম বৎসর ছিল।
৩) ইমাম মুহাম্মদ বিন ইসহাকের এ বিষয়ে উক্তি নি¤œরূপ,
রাসূল (সা.) ১২ রবিউল আউয়াল মাসে আমুল ফিলে সোমবার দিনে জন্মগ্রহণ করেন। কুরআন, সুন্নাহ এবং সীরাত বিষয়ে মুসলিম জাতির দিকদর্শক গুণি-জ্ঞানীগণের উক্তি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার হলো রাসূল (সা.) এর শুভ জন্ম তারিখ। তাই তারা অন্য কোনো অভিমতের উল্লেখও করেননি।
প্রখ্যাত মুফাসসীর আল্লামা ইবনে কাছীর তৎপ্রণীত সীরাত গ্রন্থে লিখেছেন, রাসূল (সা.) সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেন। ইমাম মুসলিম (র.) সহীহ মুসলিম শরীফে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, এক বেদুঈন নিবেদন করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সোমবারের রোযা সম্পর্কে আপনি কি মন্তব্য করেন? হুযূর (সা.) উত্তরে বললেন, এই দিন ঐ দিন যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমার উপর ওহী অবতীর্ণ হয়।
তারপর আল্লামা ইবনে কাছীর লিখেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এর জন্ম হয় সোমবার দিন। মক্কা শরীফ থেকে সোমবার দিনে হিজরত করেন। মদীনা মুনাওয়্যারায় সোমবার দিনে পৌঁছেন। ইন্তিকাল করেন সোমবার দিন। যে দিনটিতে হাজরে আসওয়াদ পবিত্র হাতে যথাস্থানে স্থাপন করেন সে দিনটিও ছিল সোমবার। তারপর ইবনে কাছীর বলেন, জমহুরের মত হলো রাসূল (সা.) ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। 
ভারত উপমহাদেশের অন্যতম শায়খুল হাদীস হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.) মাদারিজুন্নুবুওয়াত কিতাবে উল্লেখ করেন, “সঠিকভাবে অবগত হও জমহুর সীরাতবেত্তাগণ ও ঐতিহাসিকগণের মতে রাসূল (সা.) ‘আমুল ফিলের’ (আবরাহার ধ্বংসের) চল্লিশ দিন বা ৫৫ দিন পর জন্মগ্রহণ করেন।” উল্লেখিত মত সবচেয়ে বিশুদ্ধ।
সুখ্যাত সুপরিচিত মত হলো মাস ছিল রবিউল আউয়াল এবং তারিখ ছিল ১২। শায়খুল হাদীস আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.) তারপর কয়েক ছত্র ফার্সি কবিতা লিখেছেন। নিম্নে তিন ছত্র কবিতার ভাবার্থ উদ্ধৃত হলো,
১) “রাসূল (সা.) এর জন্মের রাত কত রৌশন রাত ছিল। মক্কা শরীফের দরজা থেকে শামের এলাকা পর্যন্ত রৌশন হয়েছিল।
২) যে কোনো ধরনের লু-হাওয়া সে ঘাসকে শুস্ক করতে পারেনা, যে ঘাসকে সতেজ রেখেছে রাসূল (সা.) এর কৃপাদৃষ্টি।
৩) আল্লাহতাআলার শোকর দুনিয়া ও দ্বীনের সব নিআমত আমি (হক্কি) লাভ করেছি। ঐ বাদশাহ অর্থাৎ রাসূল (সা.) এর দৌলতখানা থেকে।”
শুনা যায় কেউ কেউ জনৈক মাহমুদ পাশা জ্যোতির্বিদের মত ব্যক্ত করেছেন যে, শুভ জন্মের তারিখ ছিল রবিউল আউয়াল মাসের ৯ তারিখ। মুসলিম সমাজের দিকদর্শক গুণি-জ্ঞাণীগণের অভিমতের বিরুদ্ধে জনৈক ব্যক্তির জ্যোতির্বিদ্যা নির্ভর উক্তির মূল্য কতটুকু বিজ্ঞ পাঠক সহজেই অনুমান করতে পারেন। জাস্টিজ পীর করমশাহ আল আযহারী (র.) দ্বিয়াউন্নবী কিতাবে মাহমুদ পাশার উক্তি উদ্ধৃত করেছেন। তারা মাহমুদ পাশাকে এবং তার দেশ কোথায় এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
অনেকের মতে মাহমুদ পাশা ছিলেন মিশরের অধিবাসী, আবার অনেকের মতে মক্কাবাসী, আবার অনেকের মতে তুরস্কবাসী। যদি ধারণা করা হয় যে, মাহমুদ পাশা জ্যোতির্বিদ্যার আলোকে এ বিষয়ে কিছুটা নিরীক্ষণ করে একটি অভিমত পেশ করেছেন। তবে সাহাবায়ে কিরাম তাবেঈন ও সুখ্যাত মুসলিম মনীষীগণের মতামতের বিপরীত ঐ ব্যক্তির নিরীক্ষণকে সঠিক বলা যায় না।
অবশেষে বলা যায় জ্যোতির্বিদগণ রাসূল (সা.) এর শুভ জন্মের তারিখ সম্পর্কে নিরীক্ষণ করে যদিও বিবিধ মত প্রকাশ করেছেন, কিন্তু এতো বড় গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন ঠিক করার দায়িত্ব কেবলমাত্র জ্যোতির্বিদদের হাতে ন্যস্ত করা যায় না। মুসলমানগণ গুরুত্ব সহকারে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখের দিন ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে আসছেন এবং কিআমত পর্যন্ত এ আমল জারি থাকবে ইনশাআল্লাহ।

বাঙালি নির্যাতন, আজ কংগ্রেসের ৬ ঘন্টার ধর্না মালিডহরে

 
RTN tv Live, Kalain, 20 অক্টোবর :- আজ (মঙ্গলবার)  পার্শ্ববর্তী রাজ্য মেঘালয়ে বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদী ৬ ঘন্টা ব্যাপী ধর্না কর্মসূচী পালন করবে কালাইন ব্লক কংগ্রেস। স্থান, আসাম-মেঘালয় সীমান্তবর্তী মালিডহর।  কালাইন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিশাল সরকার উপ সভাপতি জাকির হোসেন খানরা সংবাদ মাধ্যমকে জানান,   আজ ( মঙ্গলবার)  ২০ অক্টোবর   সকাল ৮ ঘটিকা থেকে বিকাল ২ ঘটিকা পর্যন্ত মেঘালয়ে বাঙালিদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ৬ ঘন্টা ধর্না কর্মসূচি পালন করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কালাইন ব্লক কংগ্রেস।  এই ধর্না কর্মসূচীর সফল বাস্তবায়ন করতে  সর্বস্তরের জনগণ ও  কংগ্রেস কর্মীদের উপস্থিতি কামনা করে তারা আরও বলেন,   এদেশে বহুজাতি বহুগোষ্টি, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হলেও কোন না কোনো ক্ষেত্রে কোন রাজ্যে জাতীভেদ, প্রতিহিংসা দেখাদেয়। বিশেষ করে বাঙালি জাতিকে অন্য নজরে দেখা হয় সবসময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিশেষকরে মেঘালয় রাজ্যে খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা বাঙ্গালিদের উপর চরম নির্যাতন চালান বিভিন্ন সময়ে। তাছাড়া মিজুরাম, নাগাল্যান্ড সহ অন্যান্য রাজ্যগুলিতে এর ভুরি ভুরি প্রমাণ রয়েছে। একথা উল্লেখ করে ব্লক ক;গ্ৰেসের কর্মকর্তারা জানান বাঙ্গালীদের উপর প্রতিহিংসা ও নির্যাতনের মুলে রয়েছে মেঘালয়ের খাসিছাত্র স;স্থার কর্মকর্তারা। মুলত মেঘালয়ে কয়লা বাণিজ্যই প্রধান,আর এই কয়লার সুবাদে বরাকের কয়লা ব্যবসায়ী সহ কয়লার শ্রমিকরা ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র সঙ্গে নিয়ে মেঘালয় রাজ্যে গেলেও শ্রমিকদেরেকে ভারতীয় হিসেবে দেখা হয়নি, দেখা হয় বাঙালী হিসেবে এতেই বাঙ্গালীদের উপর স্টিমরোলার চালানো  হয়। বাঙালিদের উপর এরকম নির্যাতন যুগ যুগ ধরে জারি রয়েছে এটা কোন নতুন বিষয় নয়।  বরাক উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে খাসি সম্প্রদায়ের লোক স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। এমনকি বসবাস ছাড়াও  ব্যবসায়ী সূত্রে খাসিরা অহরহ বরাকে আসা যাওয়া করলেও তাদের উপর বাঙালিরা নির্যাতন করছে এমন শব্দ শোনা যায়নি। বরঞ্চ খাসিয়া সম্প্রদায়কে জামাই আদর করা হয় বরাকে । ইদানিং কালে নানা অজুহাত দেখিয়ে বাঙ্গালীদের উপর নানাভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে খাসি সম্প্রদায়ের লোক। প্রতিবাদ তো কম হয়নি? তবুও নির্যাতনের মাত্রা বিন্দুমাত্র কমেনি বরং দিন দিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তবুও বাঙালিরা আইন হাতে নেবে না, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণ-আন্দোলন ও ধর্না কর্মসূচি প্রতিবাদ ইত্যাদি সাইবস্থ করবে বিভিন্ন দল স;গঠন। ইদানিং কালে বাঙ্গালীদের উপর প্রতিহিংসা মেটাতে খাসীয়ারা নানা ধরনের নির্যাতন চালাচ্ছে।এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কালাইন ব্লক কংগ্রেসের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল ৮ ঘটিকা থেকে বিকাল ২ ঘটিকা পর্যন্ত আসাম মেঘালয় সীমান্তবর্তী মালিডহরে ৬ ঘণ্টার ধরণা কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পালন করার সহযোগিতা কামনা করছেন কালাইন ব্লক কংগ্রেস কমিটি পক্ষে ব্লক সভাপতি বিশাল সরকার, জাকির হোসেন খান সহ অন্যান্যরা। একইভাবে বাঙ্গালীদের উপর খাসিয়াদের  নির্যাতনের প্রতিবাদে আমরা বাঙ্গালী স;স্থার তরফে ওই দিন মালিডহরে প্রতিবাদ সাইবস্থের কথা আগেই ঘোষণা করছেন স;স্থার তরফে সাধন পুরুকায়স্থ।

ইয়াকুবিয়া হিফজুল ক্বুরআন বোর্ডের আত্মপ্রকাশ


RTN tv Live, বড়খলা, ২০ অক্টোবরঃ-  হাফিজিয়া মাদ্রাসা গুলোকে    নিয়ে একটি বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে  আসছিলেন একাংশ   আলীম-উলামা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকরা। আর এই প্রয়োজনের তাগিদে রবিবার  আত্মপ্রকাশ করলো "ইয়াকুবিয়া হিফজুল ক্বুরআন বোর্ড"। এ উপলক্ষে  রবিবার বাবুর বাজার হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এক সাধারণ আয়োজন করা হয়। 

পালংঘাট হাইয়ার সেকেণ্ডারী স্কুলের প্রিন্সিপাল হজরত মাও আনোয়ার উদ্দিন তালুকদারের পৌরহিত্যে আয়োজিত সভায় হাফিজিয়া মাদ্রাসার বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন, বড়যাত্রাপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান হাফিজ মাও একরাম আলী, বড়হাইলাকান্দি সিনিওর মাদ্রাসার শিক্ষক হজরত মাও  তাজিম উদ্দিন তালুকদার, আল হিলাল ইসলামিক একাডেমির প্রিন্সিপাল মাওলানা মুজাহিরুল হক চৌধুরী, তারিনীপুর মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক, হাফিজ আতিকুল হক, দুধপুর নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফিজ রুহুল আমীন প্রমুখ।  তারা প্রত্যেকেই হাফিজিয়া মাদ্রাসার শৈক্ষিক পরিবেশ আরও উন্নতি করতে এবং যুগের চাহিদা অনুযায়ী  বোর্ড গঠনের উপর সম্মতি প্রদান করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে " ইয়াকুবিয়া হিফজুল ক্বুরআন বোর্ড" নামে   হাফিজিয়া মাদ্রাসাগুলো কে নিয়ে একটি নতুন  বোর্ডের আত্মপ্রকাশ হয়। প্রাথমিক ভাবে সাতটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা এই বোর্ডের অধিনে চলে এসেছে। এরা হলো, বাবুর বাজার হাফিজিয়া মাদ্রাসা, তারিনীপুর মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা, দুধপুর নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা, কান্দিগ্রাম হাফিজিয়া মাদ্রাসা, বড়যাত্রাপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা, সোনাপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং সরিষাকুড়ি হাফিজিয়া মাদ্রাসা। এছাড়াও গাইডলাইন মেনে যেকোনো হাফিজিয়া মাদ্রাসা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে।  নবগঠিত হিফজুল ক্বুরআন বোর্ডের সভাপতি ও সহ সভাপতি  নির্বাচিত হয়েছেন হাফিজ একরাম আলী ও হাফিজ সেলিম উদ্দিন।  ক্বারি মাও কিরামত আলী কে সাধারণ সম্পাদক ও হাফিজ রুহুল আমীন কে সহ সম্পাদক মনোনীত করা হয়।  বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, হাফিজ নজমুল হুসেন (সোনাপুর), হাফিজ আতিকুল হক (কাটিগড়া), হাফিজ এনামুল ইসলাম (সরিষাকুড়ি), হাফিজ ছালাম উদ্দিন (কান্দিগ্রাম) এবং জানাব ইসলাম উদ্দিন। এছাড়াও উপদেষ্টা মণ্ডলী গঠন করা হয়। উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যরা হলেন, হজরত মাও আনোয়ার উদ্দিন তালুকদার, হযরত মাও রফিকুল ইসলাম,  ক্বারি তাজিম উদ্দিন তালুকদার ও হযরত মাও মুজাহিরুল হক।

Monday, 28 September 2020

আনলকেও লক তারিনীপুর জিপি অফিস, নথিপত্র যোগাড়ে চরম বেকায়দায় জনগণ, পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের নিস্ক্রিয় ভুমিকায় ক্ষোভ

আরটিএন টিবি লাইভ , পূর্বকাটিগড়া,  ২৮, সেপ্টেম্বরঃ- 
জিপি সার্টিফিকেট সহ গাও পঞ্চায়েত স্তরের বিভিন্ন সরকারি নথিপত্র যোগাড় করতে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন কাটিগড়া উন্নয়ন খন্ডের অন্তর্গত তারিনীপুর জিপির আমজনগণ।  বুধবার স্থানীয় করিম উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুল বাছিত বেগ, মাওলানা সরফ উদ্দিন, আব্বাস উদ্দিন তালুকদার, কুতুব উদ্দিন প্রমুখরা ক্ষোভ প্রকাশ করে  বলেন, প্রতিদিন জিপি সার্টিফিকেট, মৃত্যুর প্রমাণ পত্রের আবেদন, টেক্স প্রদান, ছাত্রবৃত্তির জন্য ইনকাম সার্টিফিকেট সহ নানা কাজে গাও পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা থেকে পুরুষ-মহিলারা জিপি অফিসে ছুটে  আসেন। 

ঘন্টার পর ঘন্টা তারা জিপি সচিব, টেক্সকালেক্টার ও অন্যান্য সরকারি আমলাদের অপেক্ষা করেন। কিন্তু আখেরে কোনো সরকারি আমলার টিকির নাগাল পাওয়া যায় না।  দীর্ঘদিন থেকেই বনধ পড়ে রয়েছে তারিনীপুর জিপি অফিসের কার্যালয়। এমনকি অফিস গৃহের তালা পর্যন্ত খোলা হয় না। কোবিড১৯ এর জন্য যে লকডাউন করা হয়েছিল তা আজও অব্যাহত রয়েছে তারিনীপুর জিপি অফিসে। দীর্ঘদিন থেকে বনধ পড়ে থাকার ফলে কার্যালয়ের আশাপাশে নোংরা পরিবেশ গড়ে উঠেছে। ছোটো থেকে ছোটো কোনো কাজের প্রয়োজনে পঞ্চায়েত সভানেত্রী সায়রা বেগম ও টেক্সকালেক্টার অসিম দাসের বাড়িতে যেতে হয়। কিন্তু বাড়িতে গিয়েও বেশির ভাগ সময় তাদের দেখা মেলে না। এজন্য পঞ্চায়েত স্তরের বিভিন্ন অতিপ্রয়োজনীয় নথিপত্র যোগাড় করতে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে চুড়ান্ত বেকায়দায় পড়েছেন জিপির আম জনগণ। তারা আরও বলেন, এই কয়দিন আগে অলক ঘোষ নামের একজন   তারিনীপুর জিপির সচিবের  দায়িত্বগ্রহণ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এলাকার জনগণের সাথে  দেখা সাক্ষাৎ করা বা অন্তত একদিনও অফিসে আসার প্রয়োজন বোধ  করেন নি তিনি। এই কদিন আগে  তিনি চুপিসারে পঞ্চায়েত সভানেত্রী সায়রা বেগমের বাড়িতে গিয়ে পরিচিত সভা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।  জিপি অফিসের কার্যালয় রেখে সভানেত্রীর বাড়িতে কেন পরিচিতি সভা ? এমন প্রশ্নও তুলেন তারা। এর জন্য জিপির সিংহভাগ পঞ্চায়েত স্তরের প্রতিনিধিরাও সমানভাবে দায়ী । তারা আমলাদের কথায় উঠা বসা করেন। জনগণের  গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধানে সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় ভুমিকা পালন করে চলেছেন জিপির পঞ্চায়েত সভানেত্রী সহ গ্রুফ সদস্যরা।  তারা যদি পঞ্চায়েত অফিসে পরিচিতি সভার কথা বলতেন তাহলে অবশ্যই নতুন সচিব জিপি অফিসে  সভা করতে বাধ্য হতেন। কিন্ত তা না করে আমলাদের কথায় ওঠবস করে চলেছেন পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। কারণ যদি সচিব সহ অন্যান্য আমলারা বিরাগভাজন হয়ে যান তাহলে  এনজিআরএস, জিপিডিপি সহ নানা দুর্নীতির মাধ্যমে পকেট ভারী করার ভাড়া ভাতে ছাই পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ত্রিস্তরের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা জি হুজুর জি হুজুর করে আমলাদের পিছনে পিছনে ঘুরে বেড়ান । পাশাপাশি তারা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেন, অনতিবিলম্বে জিপি কার্যালয় সচল করে যথারীতি কাজ-কর্ম চালিয়ে যেতে সরকারি আমলাদের কড়া নির্দেশ দেওয়ার দাবী জানান। অন্যথায় আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আজকের এই  ক্ষোভ প্রকাশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাশুক আহমদ, ফয়সাল উদ্দিন, ছারিমুল হক, ছয়দুর রহমান সহ অন্যান্যরা।