Showing posts with label রাজ্য. Show all posts
Showing posts with label রাজ্য. Show all posts

Monday, 29 November 2021

এআইডিওয়াইও'র আসাম রাজ্য কমিটির দ্বিতীয় সম্মেলন গোয়ালপাড়ায় অনুষ্ঠিত

এ আই ডি ওয়াই ও'র  আসাম রাজ্য কমিটির দ্বিতীয় যুব সম্মেলন গোয়ালপাড়া শহরের ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাগৃহে গত ২৮ নভেম্বর (রবিবার) অনুষ্ঠিত হয়। 
সম্মেলনের শুরুতে সংগঠনের রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন এ আই ডি ওয়াই ও'র আসাম রাজ্য সভাপতি ওসমান গনি মোল্লা এবং গণ আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি অস্থায়ী শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন নস্কর, তমাল সামন্ত, সংগঠনের আসাম রাজ্য কমিটির সভাপতি ওসমান গনি মোল্লা, সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর, রাজ্য সম্পাদক তুষার পুরকায়স্থ, অফিস সম্পাদক শিশির কাকতি প্রমুখ। মাল্যদান পর্বের পর বেকারদের কর্মসংস্থান প্রদান, কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত সকল বেকারদের উপযুক্ত হারে বেকার ভাতা প্রদান, মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করা, বন্ধ কল-কারখানা চালু করা ইত্যাদি দাবিতে স্লোগানে মুখরিত একটি সুসজ্জিত মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পরিক্রমা করে পুনরায় সভাস্থলে জমায়েত হয়। সেখানে সংগঠনের সভাপতি ওসমান গনি সহ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সভাপতিমন্ডলীর পৌরোহিত্যে পরিচালিত সভায় সংগঠনের সদস্যরা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য তমাল সামন্ত। তিনি তার বক্তব্যে যুবকদের জাতি-বর্ণের  ঊর্ধ্বে উঠে উন্নত নীতি-নৈতিকতার ভিত্তিতে যুব আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রকাশ্য সম্মেলনের মুখ্য বক্তা এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের আসাম রাজ্য কমিটির সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জননেত্রী চন্দ্রলেখা দাস আসামে প্রকৃত যুব আন্দোলন গড়ে তুলতে  উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে বামপন্থার আদর্শে যুব আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি এও বলেন যে রাজ্যে শাসকশ্রেণী মানুষকে জাতের নামে, ধর্মের নামে, কখনো রাজ্যের নামে জনসাধারণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে চলেছেন। এই বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে যুব আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। 
 প্রতিনিধি সভায় মুল খসড়া  পাঠ করেন রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য জিতেন্দ্র চলিহা। এই খসড়া প্রস্তাবের উপর আলোচনার পর সংশোধনী সহ সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। এই সম্মেলনে সাইফুল ইসলামকে সভাপতি, বিরিঞ্চি পেগুকে সম্পাদক এবং বিজিত কুমার সিনহাকে অফিস সম্পাদক নির্বাচিত করে ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আসাম রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়। এই সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য নিরঞ্জন নস্কর‌ও। তিনি এদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনুসরণ করে উন্নত আদর্শের ভিত্তিতে প্রকৃত যুব আন্দোলন গড়ে তুলে যুবকদের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানের দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সর্বশ এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের পলিটব্যুরোর সদস্য প্রখ্যাত জননেতা অসিত ভট্টাচাৰ্য্যের আসামের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপটে যুবকদের যুব আন্দোলন গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করে একটি রেকর্ডিং বক্তব্য শোনানো হয়।

সংবাদদাতা
পরিতোষ ভট্টাচার্য

Friday, 10 July 2020

মাওলানা বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ ভোট কাটুয়া, না বঞ্চিত জনগণের মঞ্চ


লেখকঃ- এখলাছ উদ্দিন
এআইইউডিএফ এর সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সর্ব বৃহৎ চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িকতার অপবাদ। অসমীয়াদের কাছে তো দলটি বাংলাদেশি মুসলমানের দল। এমনকি বাঙালি হিন্দুরাও দলটিকে একটি হিন্দু বিরোধী মুসলিম রাজনৈতিক দল হিসেবে দেখে। হিমন্ত শিলাদিত্য বাবুরা দলটির গায়ে যে লেবেলটি লাগিয়ে দিতে চান, তার কাউন্টারে যখন AIUDF এর  ব্রাণ্ডেড মৌলানা ব্রিগেড বেরিয়ে পড়েন, তখন হিমন্ত-শিলাদিত্য বাবুদের কাজটি আসান হয়ে যায়। মনে রাখতে হবে, প্রখর রোদে তিন চার ঘন্টা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে যারা ভোট দিতে যায়, তাদের বেশির ভাগই ইন্টেলেকচুয়েল নয়; বরং অতি সহজ সরল। তারা নেতাদের কথা শুনেই ভোট দেয়। ইন্টেলেকচুয়েলদের অধিকাংশই ভোটের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে যায় না। ভারতীয় গণতন্ত্রের এ এক নিগেটিভ দিক। ভারতীয় ভোটারদের অধিকাংশই  ব্রুটাস নয়; বরং এন্টনিয়র ভাষণ শুনতে পছন্দ করে। কিন্তু AIUDF যেখানে আরও বেশি টেকনিকেল এবং প্রেকটিকেল হবার কথা,  সেখানে উল্টোটাই করে দলটি। দলটির রণকৌশল থেকে সাম্প্রদায়ী মেরুকরণবাদীরাই  উপকৃত হয়ে যায় বেশি। এ উপলব্ধি অনেকেরই। 
প্রশ্ন হল AIUDF কি আদৌ মুসলমানের দল বা বাংলাদেশি মুসলমানদের পক্ষে ওকালতি করার দল?  অথবা AIUDF কি কোন সাম্প্রদায়ী দল? অথবা হিন্দু বিরোধী দল?  তার সোজা উত্তর 'না'। যারা AIUDF এর জন্মের ইতিহাস জানে, তাদের কাছে  AIUDF বঞ্চিত পীড়িতদের এক নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল। ভ্রষ্টাচার এবং শোষণের বিরুদ্ধে আপোষহীন এক মজবুত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক মঞ্চ। সবদিক দিক দিয়ে অবহেলিত এবং পদদলিতদের উদ্ধারের শপথ নিয়ে ১৩টি দলের সমাহারে গঠিত  হয়েছিল UDF/ AUDF/AIUDF নামক রাজনৈতিক দলটি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে দলটি আজ সেই অবস্থানে নেই। অনেকের কাছে দলটি এখন ভোট কাটুয়া। তারা বিজেপির উত্থানের পেছনে AIUDFকেই দায়ী করেন। তবে যে যাই বলুক, সমালোচকদের শত্রু না ভেবে  AIUDFকে ঠাণ্ডা মাথায় সিরিয়াসলি আত্মচিন্তন করতে হবে। কোথায় গলদ রয়েছে তা বের করতে হবে। একটি ধর্মনিপেক্ষ গণতান্ত্রিক দলের গায়ে কেন এবং কিভাবে সাম্প্রদায়িকতার লেবেল লাগিয়ে দিতে বিরোধিরা সফল হয়ে গেল, তা দেখতে হবে। কোন অবস্থায়ই যাতে সাম্প্রদায়ী মেরুকরণবাদীরা AIUDF থেকে অক্সিজেন না পায় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। দলের অভ্যন্তরে কোন সাম্প্রদায়িক দলের এজেন্ট অনুপ্রবেশ করেছে কি না, তা লক্ষ্য রাখতে হবে। সিন্ডিকেট মাফিয়া, টাউট-দালাল এবং সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষকদের থেকে দলকে সাবধান থাকতে হবে। ভোটকাটুয়ার অভিযোগ থেকে দলকে মুক্ত রাখতে হবে। সর্বোপরি যে আদর্শ  এবং লক্ষ্য নিয়ে দলটি গঠিত হয়েছিল, সেটা পুনরায় স্মরণ করতে হবে। দলটি যে আদৌ সাম্প্রদায়ী নয়; বরং বঞ্চিত নিপীড়িতদের উদ্ধারে এক গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ মঞ্চ- তার বাস্তব এবং ব্যবহারিক প্রমাণ দিতে হবে। দল প্রধানের মানবসেবা এবং অসাম্প্রদায়ী ইমেজ আরও সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে হবে। দলপ্রধান থেকে দলের একজন সাধারণ সদস্য পর্যন্ত দুটি শব্দ সব সময় মাথায় রাখতে হবে। একটি হল গণতন্ত্র আর অপরটি ধর্মনিরপেক্ষতা। তখনই দল সব অপবাদ এবং অপপ্রচারের জবাব দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতেই থাকবে।