কাটিগড়া উদ্ধারে হেভিওয়েট প্রার্থীতে ভরসা
প্রস্তাব নিয়ে সুস্মিতা সকাশে কাটিগড়ার ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসীরা
RTN Blog:- ঠিকঠাক থাকলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কাটিগড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী হচ্ছেন সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব। আপাতত এমই চর্চা ভেসে আসছে সুস্মিতা ঘনিষ্ঠ কাটিগড়ার কংগ্রেস মহল থেকে। এখানকার একদল কংগ্রেসী রীতিমতো সুস্মিতা সকাশে প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়ে প্রাথমিক আলোচনাও সেরে ফেলেছেন বলে সুত্রের খবর। তাই যদি হয়, তাহলে কংগ্রেস টিকেটে বিধায়ক হওয়ার চুরমার হয়ে যাবে অনেকের।
সূত্রমতে, একুশে কাটিগড়া আসনটি উদ্ধারে হেভিওয়েট প্রার্থী নিয়েই মাঠে নামতে চাইছেন একাংশ কংগ্রেস কর্মীরা। উড়ে এসে জুড়ে বসা প্রার্থী নিয়ে প্রায় ত্রিশ বছর নির্বাচন হয়েছে। এ দীর্ঘ সময় কংগ্রেস কাটিগড়ায় নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে পারে নি। তাই এবার চেনা-জানা মুখই তাদের ভরসা, এমন দাবী দলের মধ্য থেকেই উঠে আসছে। এ যাত্রায় সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী সুস্মিতা দেবই প্রথম পছন্দ। নির্ভরযোগ্য সুত্রমতে, কাটিগড়ায় প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে ইতিমধ্যে সুস্মিতা সকাশে হাজির হয়েছেন একদল কংগ্রেসীরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কাটিগড়ায় দলীয় প্রার্থী হওয়ার রীতিমতো প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও ঘনিষ্ঠ দলীয় কর্মকর্তাদের এই প্রস্তাবে সরাসরি "হ্যা"অথবা "না" বলেন নি শিলচরের প্রাক্তন এই সাংসদ। তবে সুস্মিতা মহলের আশা, আখেরে সুস্মিতাই কাটিগড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী হতে পারেন। কারণ আসন পুননির্ধারন হলে শিলচর লোকসভা আসন সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সে যাত্রায় শিলচর আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে না কংগ্রেসের এই হেভিওয়েট নেত্রীর কাছে। তাই আপাতত ক্ষমতায় ফেরার জন্য বিধানসভা নির্বাচনই একমাত্র হাতিয়ার বলে সুস্মিতা মহলের দাবি। সুস্মিতা জয়ী হলে আর দিশপুর কংগ্রেসের দখলে গেলে নিশ্চিত মন্ত্রী পদ থাকবে সন্তোষ-তনয়ার জন্য। তাই তিনি আখেরে কাটিগড়ায় দলীয় প্রার্থী হতে পারেন বলে অনুমান অনেকের। এদিকে সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের এই নেত্রী কাটিগড়ায় টিকেট প্রত্যাশী হলে অনেক ভূমিপুত্রদের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যাবে। দিদির কাছ থেকে টিকেট ছিনিয়ে আনা প্রায় অসম্ভবই হয়ে দাড়াবে তাদের জন্য। তখন দিদির হয়ে কাজ করা নতুবা লেংমারা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না স্থানীয়-বহিরাগত অন্যান্য দলীয় টিকেট দাবিদারদের কাছে। তখন যে দলীয় কোন্দল দেখা দিবে তা কিন্তু টেকাতে হবে খোদ সুস্মিতাকেই।
করোনা সংকট উপেক্ষা করে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনী রণতরী সাজাতে জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে। দিসপুরের মসনদ দখল করতে কোনো খামতি রাখতে চাইছে না কোনো দলই। নিজ নিজ দলীয় টিকেটের আশায় মাঠে-ময়দানে ঘুরিয়ে বেড়াচ্ছেন টিকেট প্রত্যাশীরাও। জনসংযোগ বাড়াতে জনতার দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন তারা৷ একইভাবে প্রত্যেক দলই নিজের সাংগঠনিক অবস্থান মজবুত করতে বিভিন্ন পদে রদবদল করে সংগঠন কে ঢেলে সাজাতে ব্যস্ত। একুশের বিধানসভা নির্বাচন কে সামনে রেখে এই একই চিত্র গোটা আসামে দেখা যাচ্ছে। সেই একই চিত্র ইন্দো-বাংলা সীমানা লাগুয়া কাটিগড়া আসনটিতেও। এই চর্চিত বিধানসভা কেন্দ্রে বর্তমান বিধায়ক অমর চাঁদ জৈন ও তাঁর দল বিজেপি বহু আগে থেকেই মাঠে-ময়দানে নেমে পড়েছেন। জনসম্পর্ক, জনসংযোগ ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপি আম জনতার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। মাওলানা বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফও পিছিয়ে নেই। সাংগঠনিক ভাবে দলীয় অবস্থান ততটা মজবুত না হলেও, জনসংযোগ রক্ষার্থে দলটিকে প্রথম কাতারে রাখতেই হবে। ব্যতিক্রম শুধু কংগ্রেসে। আপাতত তেমন লড়চড় পরিলক্ষিত হচ্ছে না দলটির মধ্যে। গোটা কাটিগড়ায় শত বছর পুরনো কংগ্রেস দলটির বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থান খাতায়-পত্রে বেশ ভালো। বাস্তবে দলটির দায়িত্বশীলরা ভাতঘুমে আচ্চন্ন। দলগত ভাবে জনসংযোগ নেই বললেই চলে। বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থান বেশ নড়েবড়ে। এই অবস্থায় স্থানীয় কয়েকজন কংগ্রেস কর্মী ভুমিপুত্রের জিগির তুলে টিকেটের দাবীদার বলে পরস্পর শুনা যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তাদেরও তেমন জনসংযোগ রক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে না। জনগণও তেমন কাউকে পছন্দ করছেন বলে হয় না। তাঁর উপর দলীয় অর্ন্তকোন্দল তো আছেই। মনপছন্দ প্রার্থী না হলেই লেং মারামারি প্রতা হয়ে গেছে কংগ্রেসের। এই অবস্থায় সুস্মিতা কে প্রার্থী করে চমক দিতে চাইছেন দলীয় কর্মীরা। আসন্ন নির্বাচনে হারজিত যাই হোক, কিন্তু বিগত লোকসভা নির্বাচন গুলোতে কাটিগড়া বাসী কংগ্রেসের ঝুলি ভরে ভোট দিয়ে আসছেন। এমনকি খোদ সুস্মিতা দেবের চৌদ্দ ও উনিশের লোকসভা নির্বাচনে কাটিগড়ায় কংগ্রেস লিড করেছে। সেই পরিসংখ্যান থেকেই হয়তো সুস্মিতায় ভরসা জাগছে কংগ্রেসীদের। ঘনিষ্ঠ মহলের প্রস্তাবে সায় দিয়ে কাটিগড়ার জমিতে সুস্মিতা দেব পা মাড়ান কিনা, তাই আখেরে দেখার বিষয়।