লেখকঃ অরূপ বৈশ্য
সবকিছুরই একটা সময় আছে, যখন লড়াইটা আদিম ও আধুনিক জীবন্ত প্রাণের মধ্যে, তখন মন কি বাতের ভাঙা রেকর্ড বাজালে চলে না।
লকডাউন যখন চেইন ব্রেকের জন্য ভাবা হয়েছিলো তখন করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। যখন ট্রেসিং - টেস্টিং - আইসোলেশনকে মুখ্য ভাবা হয়েছে, তখন যতোভাবে তাকে অবজ্ঞা করা যায় তা করা হয়েছে, তবে অর্থ ব্যয় করে বড় ব্যবসায়ীদের পকেট ভরার ক্ষেত্রে কোনো খামতি ছিল না।
এখন যখন কম্যুনিটি ট্রান্সমিশন হয়ে গেছে, যখন আমাদের টেস্ট করার ও হাসপাতালের সুবিধা দেওয়ার পর্যাপ্ত সুবিধা নেই, তখন আবার আগের পদ্ধতির জয়গান চলছে।
রন্ধ্রে রন্ধ্রে দূর্নীতি, মুনাফাখোরদের লাভের জন্য বুদ্ধি সাঁটতে ব্যস্ততা ও ক্ষমতার দম্ভ চিন্তাশক্তিকে স্থবির করে দেয়, মস্তিষ্কের রেকর্ডে পিন আঁটকে যায়। ঘ্যানর ঘ্যানর করে একই শব্দবন্ধ কানে বাজতে থাকে, "লকডাউন, টেস্টিং, ট্রেসিং, আইশোলেশন ইত্যাদি' - শব্দগুলি সবার মুখস্ত, তাই মন কি বাত এই শব্দযুগলে মানুষ ভালো বুঝে।
কিন্তু আমাদের অপ্রতুল প্রস্তুতির কথা স্বীকার করতে আপত্তি কোথায়? জনগণকে সত্যি কথা জানাতে আপত্তি কোথায়? সত্যি কথা না জানিয়ে চিকিৎসার নামে নরক ভোগান্তির কী মানে?
কম্যুনিটি ট্রান্সমিশনের পর বরাকের ২% মানুষকে সুলভ ও সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কি আমাদের আছে? যদি নেই, তাহলে সেই বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে এবার আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। চেইন ব্রেক করার ক্ষেত্রে আগের ভুলগুলো তো আর সংশোধন করা যাবে না, কিন্তু বর্তমানে কিছু সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
সেই সঠিক পদ্ধতির অন্যতম হচ্ছে, জনগণ যাতে সংক্রমণ হলে শুরুতেই সতর্কতামূলক প্রাথমিক পদক্ষেপ নিজেরাই নিতে পারে তারজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সাপোর্ট সিস্টেম রেডি করা। আমাদের গ্রাম - শহরে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন, তাদের জন্য একদিনের রিগোরাস ট্রেনিংই যথেস্ট। টিবি নির্মূলীকরণ অভিযানে স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে কাজ করেছেন সেভাবে তাদের কাজে লাগান, তাদের জন্য হাততালি নয়, তাদের পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দিন।
কিন্তু সঠিক পদ্ধতি গ্রহণের আশায় গুড়ে বালি, হাওয়ায় যে গান্ধীর ছবি থাকা কাগজগুলো উড়ছিলো, তা তো পকেটস্থ হয়ে গেছে।