Showing posts with label লেখকের আড্ডা. Show all posts
Showing posts with label লেখকের আড্ডা. Show all posts

Monday, 24 August 2020

কভিড ও বাস্তবতা



লেখকঃ অরূপ বৈশ্য

সবকিছুরই একটা সময় আছে, যখন লড়াইটা আদিম ও আধুনিক জীবন্ত প্রাণের মধ্যে, তখন মন কি বাতের ভাঙা রেকর্ড বাজালে চলে না।

লকডাউন যখন চেইন ব্রেকের জন্য ভাবা হয়েছিলো তখন করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। যখন ট্রেসিং - টেস্টিং - আইসোলেশনকে মুখ্য ভাবা হয়েছে, তখন যতোভাবে তাকে অবজ্ঞা করা যায় তা করা হয়েছে, তবে অর্থ ব্যয় করে বড় ব্যবসায়ীদের পকেট ভরার ক্ষেত্রে কোনো খামতি ছিল না। 

এখন যখন কম্যুনিটি ট্রান্সমিশন হয়ে গেছে, যখন আমাদের টেস্ট করার ও হাসপাতালের সুবিধা দেওয়ার পর্যাপ্ত সুবিধা নেই, তখন আবার আগের পদ্ধতির জয়গান চলছে। 

রন্ধ্রে রন্ধ্রে দূর্নীতি, মুনাফাখোরদের লাভের জন্য বুদ্ধি সাঁটতে ব্যস্ততা ও ক্ষমতার দম্ভ চিন্তাশক্তিকে স্থবির করে দেয়, মস্তিষ্কের রেকর্ডে পিন আঁটকে যায়। ঘ্যানর ঘ্যানর করে একই শব্দবন্ধ কানে বাজতে থাকে, "লকডাউন, টেস্টিং, ট্রেসিং, আইশোলেশন ইত্যাদি' - শব্দগুলি সবার মুখস্ত, তাই মন কি বাত এই শব্দযুগলে মানুষ ভালো বুঝে।

কিন্তু আমাদের অপ্রতুল প্রস্তুতির কথা স্বীকার করতে আপত্তি কোথায়? জনগণকে সত্যি কথা জানাতে আপত্তি কোথায়? সত্যি কথা না জানিয়ে চিকিৎসার নামে নরক ভোগান্তির কী মানে?

কম্যুনিটি ট্রান্সমিশনের পর বরাকের ২% মানুষকে সুলভ ও সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কি আমাদের আছে? যদি নেই, তাহলে সেই বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে এবার আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। চেইন ব্রেক করার ক্ষেত্রে আগের ভুলগুলো তো আর সংশোধন করা যাবে না, কিন্তু বর্তমানে কিছু সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়। 

সেই সঠিক পদ্ধতির অন্যতম হচ্ছে, জনগণ যাতে সংক্রমণ হলে শুরুতেই সতর্কতামূলক প্রাথমিক পদক্ষেপ নিজেরাই নিতে পারে তারজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সাপোর্ট সিস্টেম রেডি করা। আমাদের গ্রাম - শহরে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন, তাদের জন্য একদিনের রিগোরাস ট্রেনিংই যথেস্ট। টিবি নির্মূলীকরণ অভিযানে স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে কাজ করেছেন সেভাবে তাদের কাজে লাগান, তাদের জন্য হাততালি নয়, তাদের পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দিন।

কিন্তু সঠিক পদ্ধতি গ্রহণের আশায় গুড়ে বালি, হাওয়ায় যে গান্ধীর ছবি থাকা কাগজগুলো উড়ছিলো, তা তো পকেটস্থ হয়ে গেছে।

Friday, 21 August 2020

ইমাম মাহদীর অপেক্ষায়, কবে এসে রক্ষা করবেন?

আজকে থেকে প্রায় ১ হাজার বছর আগে চেঙ্গিসখানের সৈন্যরা যখন পৃথিবী দখল করে নিচ্ছিল, মুসলমানরা তাদেরকেই ইয়াজুজ মাজুজ ভেবে মাহদীর জন্য অপেক্ষা করছিল। বলেছিল যুদ্ধ করে কী লাভ! মাহদী ছাড়া আর কেউ ওদের ঠেকাতে পারবে না। সুলতান রুকনুদ্দিন বাইবার্স এবং তুর্কীরা ওদেরকে প্রথম ঠেকিয়ে দিয়ে অন্যদের বুঝিয়েছিল এরা ইয়াজুজ মাজুজ না।এরা অপ্রতিরোধ্য নয়, এদেরকেও পরাজিত করা যায়।
ক্রুসেডাররা যখন মসজিদুল আকসা দখল করে নিয়েছিল, তখন মুসলমানরা ধরেই নিয়েছিল এরাই দাজ্জাল। মাহদী আসবে, আল আকসা উদ্ধার করবে, মুসলমানদের বাঁচাবে। ঈমাম মাহদী আসেনি। সুলতান সালাউদ্দিন আল আয়ুবী জেরুজালেম বা আল আকসা খ্রিস্টানদের কাছ থেকে উদ্ধার করেন।

তারও আগে খলীফার ক্ষমতা যখন কেবল বাগদাদের প্রাসাদ কেন্দ্রিক হয়ে পড়ে, মুসলমানরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে, চারিদিক থেকে মার খাচ্ছিল। এমন খারাপ সময়ে মুসলমানরা মাহদীর অপেক্ষা করে। ধরে নেয় মাহদী এসে রক্ষা করবে। সে সময়ে সুলতান আল্প আরসালান এসে ছিন্নভিন্ন মুসলমানদের একত্রিত করেন, যাযাবরের মত ঘুরে বেড়ানো, চারিদিকে মার খাওয়া মুসলমানদের জন্য আনাতোলিয়ার সেলজুক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলমানদের জন্য শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলে মুসলমানদের উদ্ধার করেন। আল্প আরসালান অর্থ সিংহ সৈনিক বা সিংহের মত বীর।সুলতান আল্প আরসালানের আসল নাম মুহম্মদ। 

স্পেনে যখন মুসলমানদের পতন হচ্ছিল, তখনো অনেকে ধরে নিয়েছিল মাহদী এসে তাদেরকে রক্ষা করবে। কেউ রক্ষা করেনি, স্পেনের মুসলিম সভ্যতা হারিয়ে যায়।

৭শ বছর আগে বাইজেন্টাইন আর মঙ্গোলীয়দের কাছে যখন মার খাচ্ছিল মুসলমানরা তখনো অনেকে মাহদীর আশায় ছিল। তখন ওসমান ইবনে আর্তুরুল এসে বাইজেন্টাইনদের মার দিয়ে ওসমানী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। যারা পরে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যকেই ভেঙে দেয়, তাদের রাজধানী ইস্তাম্বুল জয় করে নেয়। প্রায় সব গুলো ক্রুসেড ঠেকিয়ে দেয়। প্রায় অর্ধেক ইউরোপের দখল নিয়ে নেয়। মুসলমানদের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। কনস্টান্টিনোপল বিজয়ী সেনাপতির নামও মুহম্মদ। 

আজকে থেকে তিনশ বছর আগেও মানুষ মাহদী আসবে বলে প্রস্তুতি শুরু করেছিল, অপেক্ষায় ছিল।
বলেছিল চেষ্টা করে কী লাভ! মাহদী ছাড়া আর কেউ ওদের ঠেকাতে পারবে না। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বিভিন্নবার মুসলমানরা নিজেদের বিপদ থেকে নিজেরা উদ্ধার হওয়ার চেষ্টার বদলে মাহদীর অপেক্ষা করেছে।ব্রিটিশ আমলেও ভারতের কাদিয়ানের একজন নিজেকে নবী,  মাহদী, ঈসা/মসীহ দাবী করেছিল। তার শক্তিশালী সমর্থক গোষ্ঠীও রয়েছে। যারা আহমদিয়া বা কাদিয়ানী নামেও পরিচিত। কেয়ামতের অনেক আলামতের এখনো প্রচুর বাকী আছে।  বলা হয়েছে কেয়ামতের আগে মাহদী আসবে, যার আসল নাম হবে মুহম্মদ। 

মুসলমানদের যতবারই দূঃসময় আসে তারা মাহদীর জন্য অপেক্ষা করে। ধরে নেয় মাহদী এসে মুসলমানদের রক্ষা করবে। প্রত্যেকবারই কেউ না কেউ নিজেকে মাহদী দাবী করে বসে। যুগে যুগে আরো এমন মাহদী, ঈসা, মসীহ, নবী দাবীদার আসবে। মুসলমানরা কাউকে ইয়াজুজ-মাজুজ ভাববে, কাউকে দাজ্জাল ভাববে, কাউকে মাহদী/ঈসা মেনে নিয়ে অনুসরণ করবে।  সালাউদ্দিন আয়ুবী, রুকনুদ্দীন বাইবার্স, আল্প আরসালান, ওসমানরা এসে রক্ষাও করবে।
এমন হয়তো আরো শতশত বছর চলবে। তবে সহসাই যে মাহদী/ঈসা/দাজ্জাল আসবে না, সেটা মোটামুটিভাবে বলে দেয়া যায়। তাই আমার মাহদী নিয়ে কোনো আগ্রহ নাই। মাহদী আসলে সেটা এমনিতেই বুঝা যাবে, কেউ তাকে বা তার ক্ষমতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। 

লিখেছেন: তাহমিদুল ইসলাম

Friday, 7 August 2020

বাবর কি সত্যিই রামমন্দির ভেঙে ফেলেছিলেন?



বাবর যদি রাম জন্মস্থান অর্থাৎ রামমন্দির ধ্বংসের আদেশ দিতেন তাহলে তার উল্লেখ 'তুজুক ই বাবরি'  বা সমসাময়িক অন্য কোথাও লেখা থাকতো। রাম মন্দির ধ্বংসের কথা উল্লেখ করতে বাবরের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। তিনি যদি ধর্মীয় কারণে এই মন্দির ধ্বংসের আদেশ দিতেন তাহলে তিনি তার স্মৃতিকথায় সে কথার উল্লেখ করতে গর্ববোধ করতেন। গোয়ালিয়রের কাছে উড়িয়া উপত্যকায় নগ্ন-জৈন  মূর্তিগুলি ধ্বংসের যে আদেশ বাবর  দিয়েছিলেন সে কথা  স্বীকার করতে তিনি দ্বিধাবোধ করেননি। এই মূর্তিগুলি তার অশ্লীল বলে মনে হয়েছিল। যদি নগ্ন মূর্তি নষ্ট করার কথা স্বীকার করতে তিনি গর্ববোধ করতে পারেন তাহলে রাম জন্মস্থান মন্দির ধ্বংসের কথা তিনি উল্লেখ অনায়াসে করতেই পারতেন। ঐতিহাসিকদের মতে বাবরের আত্মবিশ্বাস প্রবল ছিল বলেই এসব তিনি নির্দ্ধিধায় বলতে পারতেন। 

 বাবরের সমসাময়িক সূত্র গুলিতেও অযোধ্যায় মন্দির ধ্বংসের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না। এমনকি তুলসীদাস যিনি হিন্দিতে 'রামচরিতমানস' লিখেছিলেন এবং যিনি পরম রামভক্ত ছিলেন তিনিও এরকম কোনো ঘটনার উল্লেখ করেননি। বাবর বা  তার কোনো সভাসদ রাম মন্দির ধ্বংস করতেন তবে তা সমসাময়িক হিন্দুদের চোখ এড়িয়ে যেত না। জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিকরা একথা ঠিকই বলেছেন যে "এ সম্পর্কে তথ্যাদি সরকারি নথিতে প্রথম পাওয়া যায় ঊনবিংশ শতাব্দীতে। এ বিষয়ের নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক প্রমাণের কথা উঠলে এসব নথিরই উদাহরণ দেওয়া হতো।" মন্দির ধ্বংসের কথা আমরা পাই বৃটিশ নথিতে। পি কার্নেগির 'হিস্টোরিক্যাল স্কেচ অব তহসিল ফৈজাবাদ, ১৮৭০', এইচ,আর নেভিলের 'ফৈজাবাদ ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার, এলাহাবাদ,১৯৫০' ইত্যাদিতে। তাও সব নথি, তথ্য অনুমাননির্ভর। বাবরের স্মৃতিকথার অনুবাদক শ্রীমতি এ,এফ,বেভারিজ লিখেছেন, বাবর যেহেতু মুসলমান ছিলেন, তাই নিশ্চয়ই আংশিকভাবে হলেও রামমন্দির ভেঙ্গে সেখানে মসজিদ স্থাপন করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তের পেছনে তার যুক্তি, বাবর মুসলমান, তাই অন্যধর্মের প্রতি তিনি উদার ছিলেন না! তিনি তার লেখায় মন্দির আছে বলেও কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেন নি। মনমতো পাইকারি একটা সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে তিনি ভুলেই গেছেন, তার অনুদিত কাব্যে তিনি লিখেছেন, বাবর তাঁর পুত্র হুমায়ুনকে  হিন্দুদের প্রতি সহনশীল হওয়ার  উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, যদি ভারতবর্ষ শাসন করতে চাও তো গরুর মাংস খেয়ো না'।                     

ইতিহাস এবং ঐতিহাসিকদের আলোচনা বিশ্লেষণ করলে বাবরের মন্দির ধ্বংসের কোনো প্রমাণ তো পাওয়া যায়ই না। বরং রামমন্দিরের কোনো অস্তিত্ব কোনো ইতিহাসবিদও প্রমাণ করতে পারেন নি। সেখানে রামের জন্মস্থান ছিল বলে কোনো নথিতে আমি অন্তত পাই নি। সে বিষয়ে অন্য পোস্টে বিস্তারিত তুলে ধরার ইচ্ছে আছে।

লেখকঃ- মানসি চৌধুরী  

Tuesday, 9 June 2020

বর্ণবাদ ব্যতীত হিন্দুধর্ম ভাবা যায়?

'ব্রাহ্মণ পাত্র চাই'- কৌতুহল বশতঃ একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকের পাত্র পাত্রীর চাহিদা গুলো দেখছিলাম।কোথাও হিন্দু বা মুসলিম পাত্র চাই চোখে পড়লো না।বেশিরভাগ ব্রাহ্মণ , কায়স্থ,সাহা এইসব পাত্র চাই সঙ্গে একটা সরকারি চাকরিও চাই।

তাহলে আমারা সবাই হিন্দু ,এই কথার কোন মূল্য আছে?হিন্দু যদি সব বর্ণের হিন্দুদের বিবাহ করতেই রাজী নয়  তবে এই ধর্মকে সাম্যবাদী কিংবা বর্ণবাদী বিরোধী ধর্ম বলা যায়?

আমেরিকায় যে বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে তার আগুন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরছে।ভারতেও কিছু মানুষ বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন। কিন্তু আমাদের হিন্দু ধর্মের ভিত্তি হল বেদ,গীতা, মনুসংহিতা যেগুলোর মূলে আছে ভারতীয় সমাজকে চার বর্ণের বিভাজন। যেটা ব্রাহ্মণ্যবাদ বা মনুবাদ বলা হয়। বৈদিক ব্রাহ্মণদের কাজ হচ্ছে এই চার বর্ণের বিভাজন বজায় রেখে হিন্দু ধর্মের রক্ষা করা।

তাহলে হিন্দু ধর্ম থেকে বর্ণবাদকে আলাদা করা সম্ভব?ব্রাহ্মণ্যবাদে সবচেয়ে নিপীড়নের স্বীকার শূদ্ররা বর্তমানে যাদের দলিত বলা হচ্ছে। কিছু বর্ণহিন্দু বর্ণবিভাজনের বিরোধী যেমন আমি। আবার কিছু দলিত আবার ব্রাহ্মণ্যবাদীদের পক্ষে যারা আমি ব্রাহ্মণ্যবাদীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি বলে আমাকে রীতিমতো গালাগাল এবং হুমকি দিয়ে যাচ্ছে যদিও আমি ঐসবে ভয় পাই না। হাজার হাজার বছর ধরে নিপীড়িত শূদ্রদের পক্ষে বলে যাব তার জন্য যদি বর্ণ হিন্দুরা আমাকে সমাজচ্যুত করে তাতেও রাজী। মুসলিম সমাজকে কিছু দলিতরা ভালো চোখে দেখে না সেটা হচ্ছে ইতিহাসের নির্মম পরিণতি। যখন ব্রাহ্মণ্যবাদ বিস্তার লাভ করে তখন মুসলমানরা ভারতে ছিল না।আর ভারতের আম গরীব মুসলমানরা বিদেশ থেকে আসেনি। ব্রাহ্মণ্যবাদের স্রষ্টা আর্যরা বিদেশ থেকে এসেছে তার যথেষ্ট প্রধাণ আছে।

আমেরিকার বর্ণবাদ আর ভারতের বর্ণবাদ এক নয়। আমেরিকার সাদা গুলো একদম দুধের মত সাদা কালো গুলো কয়লার মতো!ভারতের ব্রাহ্মণগুলো কয়লার মতো না হলেও দুধের মতো সাদা নয়। সুতরাং ভারতের বর্ণ বিভাজনটা নেচারেল নয় বরং মনুষ্য সৃষ্টি।তাই গায়ের রঙ দেখে বুঝা সম্ভব নয় কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে ব্রাহ্মণ বা কে শূদ্র।তেমনি চেহারা দেখেও আলাদা করতে পারবেন না।একমাত্র পারবেন পোষাক দেখে!

সুতরাং পাত্র পাত্রীর বিজ্ঞাপনে বর্ণ বিভাজন কেন?একমাত্র বর্ণহিন্দুদের রক্তের সংমিশ্রণ যাতে আলাদা রাখা যায় তার জন্য। কিন্তু তারা কি সেটা পেরেছে?তাহলে ব্রাহ্মণের গায়ের রঙ কালো হলো কেন?কিংবা শূদ্রেও গায়ের রঙ সাদা হলো কীভাবে? সরকারি চাকুরে হলে ব্রাহ্মণেরও অস্ববর্ণে আপত্তি নেই!

অথাৎ চাকুরে এবং সুন্দর হলে বর্ণহিন্দুদের রক্তের বিশুদ্ধতা ভঙ্গ হলেও অসুবিধা নেই। কালো কিংবা বেকার হলে সমাজচ্যুত হবে!

এইসব বিধান বৈদিক বিধানে আছে।কোন কোন গুণ থাকলে শূদ্রও ব্রাহ্মণ হতে পারবে।অথাৎ ভালো জিনিস গুলো ভগবান ওদের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন।

বিবাহ বর্ণবাদী ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বর্ণবাদী ব্যবস্থার অবসান অসম্ভব।যতই গর্বের সঙ্গে হিন্দু বলুন না কেন এতে ব্রাহ্মণ্যবাদেই শক্তিশালী হবে।বর্ণহিন্দুদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে শূদ্রদের ততটা সামাজিক অবনতি হবে।

লেখকঃ- Babul Sen

Friday, 6 December 2019

পৃথক বরাক ও দুটি কথা

পৃথক বরাক ও দুটি কথা ************************ বরাক উপত্যকায় প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্টীর বসবাস হলেও সরকারী সুযোগ সুবিধার বেলায় এই জাতি সকল আমলেই সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত । বর্তমানে কেন্দ্রে ও রাজ্যে চরম মুসলিম বিদ্বেষী সরকার থাকার বদৌলতে বিগত কয়েক বছর থেকে সরকারী সুযোগ-সুবিধা দূরের কথা এমনকি উপত্যকার তিন সদরে মুসলিমরা কর্মসূত্রে চলাফেরার ক্ষেত্রেও বার বার অতর্কিত আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।মুসলমান জাতিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে রূপান্তরিত করার দূরাশা নিয়ে ভারতবর্ষের একমাত্র আসামে NRC করে লেজেগুবরে হওয়া সেই শাসকরা এবার CAB নিয়ে মেতে উঠেছে। উদ্দেশ্য একটাই মুসলিমদের ছিন্নমূলে উপড়ে ফেলা। কপালপুড়া চক্রান্তকারী জালিম শাসক ও তাদের দুসররা জানে না যে ১৯৪৮/১৯৫১ কেন , ১৮৫১ ভিত্তিবর্ষ করলেও অধিকাংশ মুসলিম প্রমাণ পত্র নিয়ে হাজির হয়ে যাবে কারণ এরা নিজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা পলায়নকারী কেউ নয়। তবে কিছু সংখ্যক মেহনতী শ্রমজীবী মানুষ শিক্ষা কিংবা রোজগারের অভাবে পূর্বপুরুষের কাগজপত্র সামলিয়ে রাখতে পারেনি তাছাড়াও বিভিন্ন দাঙ্গার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিমরা হয়ত কাগজপত্র সুরক্ষিত রাখতে না পারার কারণে হয়রানির শিকার হবে ।এবং এই সব অসহায় মুসলিমদের দেশহীন করার লক্ষ্যেই আসছে CAB । আজ বরাক উপত্যকা ত্রিপুরার মত আসাম থেকে আলাদা একটি রাজ্য হলে জালিম শাসকদের CAB আনতে তেমন বেগ পেতে হত না । বরাক উপত্যকাকে বাংলাদেশীর ডাস্টবিন বানিয়ে দেওয়া হত । কিন্তু ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার প্রবল প্রতিরোধের কারণে CAB নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে শাসকরা। বরাক উপত্যকার মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাদ দিয়ে প্রায় সকল বাঙালি হিন্দুরা CAB এনে মুসলিমদের শায়েস্থা করার পক্ষে ।প্রতিবেশী হিন্দুদের স্নেহভাজন থাকার ইচ্ছায় বরাকের অধিকাংশ মুসলিম বুদ্ধিজীবী ব্যক্তি, দল ও সংগঠনও নিশ্চুপ। এই সংকটময় সময় ও পরিস্থিতিতে “পৃথক বরাক” দাবীর ফাঁদে মুসলিমরা পা ফেলা সমীচীন বলে মনে হয় না। যে জালিম শাসকরা ক্ষমতার বলে একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ “জম্মু ও কাশ্মীর” রাজ্যকে নিমিষে খণ্ড-বিখণ্ড করল তাদের শাসন আমলে বরাক পৃথক রাজ্য হলে মুসলিমদের অবস্থান কী হতে পারে সহজেই অনুমেয়।সুতরাং এই জটিল সময়ে “পৃথক বরাক” নামক ফাঁদে পা না ফেলে সতর্কতা অবলম্বন করে সমদূরত্ব বজায় রেখে চলাই ভালো হবে বলে মনে হয়। দেশের অর্থনৈতিক দূরবস্থা, NRC , CAB ইত্যাদি সামাজিক সংকটময় অস্থির মূহুর্তে কোনো পৃথকীকরণ নয় বহু ভাষা-ভাষী , বহু জনগোষ্টীর মিলন ক্ষেত্র আসাম রাজ্যর নাগরিক হিসাবে দেশে শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠাই হউক আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। //০৬/১২/২০১৯//

Friday, 15 November 2019

সরকারের নতুন নতুন আইন মুসলিমদের বিরুদ্ধে

#সরকারের_নতুন_নতুন_আইন_প্রসঙ্গে_কিছু_কথা -
#হৃদয়_আক্রান্ত_ব্যথা ।
এই সরকার কি শুধু মুসলিম বিদ্বেষী আইন চালু করা উদ্দেশ্যে রয়েছে ।
এই সরকার কি উন্নয়ন মূলক কোন কাজ করবে না।
পর্যায়ক্রমে এক একটা করে আইন পাশ করছেন শুধু ইসলাম ও মুসলিমদের উপর আঘাত এনে।
#আসামে সরকারি মাদ্রাসা চালু হওয়ার পর থেকে শুক্রবার সরকারি মাদ্রাসা বন্ধ থাকত, নতুন করে আইন বানিয়ে মন্ত্রী মহোদয় শুক্রবারের বদলে রবিবার বন্ধ দেয়ার নির্দেশ দেন এবং সেটা কার্যকর করেন। একবারও ভাবলেন না এই বন্ধ, না হিন্দু সংস্কৃতির না মুসলমানদের এটা হল বৃটিশদের দেয়া সংস্কৃতি। মুসলিমদের সাথে আক্রোশ মিঠাতে গিয়ে বৃটিশদের সহযোগিতা করবেন এটা কল্পনাও করিনি আমরা।
#কেন্দ্রীয় সরকার তিন তালাকের উপর আইন আনার অর্থ কি ?  এটা কি নয় যে মুসলমানদের ধর্মের উপর আঘাত আনা হচ্ছে । কারন প্রতিটা ধর্ম তার নিজস্ব ধর্মীয় আইনে চলবে, এটা কি সংখ্যালঘুদের উপর ভাড়াবাড়ি নয়। এই বিষয়ের উপর যাতে গনতান্ত্রিক নিয়মে আন্দোলন করা না যায় বিষয়টি দামাচাপা দেয়ার জন্য রাতারাতি কাশ্মীরে ৩৭০ দ্বারা বাতিল করে সবাই কে কাশ্মীর মুখি করে দিলেন। এটা কি ধর্মের উপর হস্তক্ষেপ নয়।
#এখন আবার নতুন ইসু দুই সন্তানের বেশি নেয়া যাবে না। নিজে সারা দিন দিনমজুর করে কামাব আর আপনি ঠিক করবেন সন্তান কয়টা হবে। যারা সরকারি চাকরি করে তাদের কে কি ফ্রি টাকা দেন সারা দিন পরিশ্রম করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় মাসিক বেতন। এটা কি জোর করে আইন চাপিয়ে দেয়া নয়, আসল রহস্য হল ইসলাম এসব সমর্থন করে না তাই এসব সমস্যা।

একবার ভাবুন আজ দেশ কোথায় যাচ্ছে, কুধার্থদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রাইভেট কম্পানি গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ কর্মী বেকার হচ্ছে রুটি রুজি পাচ্ছে না। এসব দূর করার চেষ্টা করুন মুসলমান সংখ্যালঘুদের কে আগের মতো স্বাধীন ভাবে চলতে দিন, আপনাদের জন্যও ভালো হবে দেশের জন্যও ভালো হবে।
মনে রাখবেন এসব গধী নমরূদ, ফিরাউন, শাদ্দাদের ঠিকে নাই। একদিন পথন হবে হবেই হবে।
বিনীত -
মুহাম্মদ আব্দুল আহাদ হানাফী