Friday, 6 December 2019

পৃথক বরাক ও দুটি কথা

পৃথক বরাক ও দুটি কথা ************************ বরাক উপত্যকায় প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্টীর বসবাস হলেও সরকারী সুযোগ সুবিধার বেলায় এই জাতি সকল আমলেই সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত । বর্তমানে কেন্দ্রে ও রাজ্যে চরম মুসলিম বিদ্বেষী সরকার থাকার বদৌলতে বিগত কয়েক বছর থেকে সরকারী সুযোগ-সুবিধা দূরের কথা এমনকি উপত্যকার তিন সদরে মুসলিমরা কর্মসূত্রে চলাফেরার ক্ষেত্রেও বার বার অতর্কিত আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।মুসলমান জাতিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে রূপান্তরিত করার দূরাশা নিয়ে ভারতবর্ষের একমাত্র আসামে NRC করে লেজেগুবরে হওয়া সেই শাসকরা এবার CAB নিয়ে মেতে উঠেছে। উদ্দেশ্য একটাই মুসলিমদের ছিন্নমূলে উপড়ে ফেলা। কপালপুড়া চক্রান্তকারী জালিম শাসক ও তাদের দুসররা জানে না যে ১৯৪৮/১৯৫১ কেন , ১৮৫১ ভিত্তিবর্ষ করলেও অধিকাংশ মুসলিম প্রমাণ পত্র নিয়ে হাজির হয়ে যাবে কারণ এরা নিজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা পলায়নকারী কেউ নয়। তবে কিছু সংখ্যক মেহনতী শ্রমজীবী মানুষ শিক্ষা কিংবা রোজগারের অভাবে পূর্বপুরুষের কাগজপত্র সামলিয়ে রাখতে পারেনি তাছাড়াও বিভিন্ন দাঙ্গার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিমরা হয়ত কাগজপত্র সুরক্ষিত রাখতে না পারার কারণে হয়রানির শিকার হবে ।এবং এই সব অসহায় মুসলিমদের দেশহীন করার লক্ষ্যেই আসছে CAB । আজ বরাক উপত্যকা ত্রিপুরার মত আসাম থেকে আলাদা একটি রাজ্য হলে জালিম শাসকদের CAB আনতে তেমন বেগ পেতে হত না । বরাক উপত্যকাকে বাংলাদেশীর ডাস্টবিন বানিয়ে দেওয়া হত । কিন্তু ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার প্রবল প্রতিরোধের কারণে CAB নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে শাসকরা। বরাক উপত্যকার মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাদ দিয়ে প্রায় সকল বাঙালি হিন্দুরা CAB এনে মুসলিমদের শায়েস্থা করার পক্ষে ।প্রতিবেশী হিন্দুদের স্নেহভাজন থাকার ইচ্ছায় বরাকের অধিকাংশ মুসলিম বুদ্ধিজীবী ব্যক্তি, দল ও সংগঠনও নিশ্চুপ। এই সংকটময় সময় ও পরিস্থিতিতে “পৃথক বরাক” দাবীর ফাঁদে মুসলিমরা পা ফেলা সমীচীন বলে মনে হয় না। যে জালিম শাসকরা ক্ষমতার বলে একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ “জম্মু ও কাশ্মীর” রাজ্যকে নিমিষে খণ্ড-বিখণ্ড করল তাদের শাসন আমলে বরাক পৃথক রাজ্য হলে মুসলিমদের অবস্থান কী হতে পারে সহজেই অনুমেয়।সুতরাং এই জটিল সময়ে “পৃথক বরাক” নামক ফাঁদে পা না ফেলে সতর্কতা অবলম্বন করে সমদূরত্ব বজায় রেখে চলাই ভালো হবে বলে মনে হয়। দেশের অর্থনৈতিক দূরবস্থা, NRC , CAB ইত্যাদি সামাজিক সংকটময় অস্থির মূহুর্তে কোনো পৃথকীকরণ নয় বহু ভাষা-ভাষী , বহু জনগোষ্টীর মিলন ক্ষেত্র আসাম রাজ্যর নাগরিক হিসাবে দেশে শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠাই হউক আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। //০৬/১২/২০১৯//

No comments:

Post a Comment

Thanks for your Valuable comment