হজ্ব ২০২০ নিয়ে অনিশ্চয়তা
স্বেচ্ছায় আবেদন প্রত্যাহারের ঘোষণা ভারতীয় হজ্ব কমিটির
রশিদ আহমদ তাপাদার, 8 জুনঃ- কোভিড১৯ এবার আছড়ে পড়লো বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব পবিত্র হজ্ব পরিক্রমায়। শুক্রবার ভারতীয় হজ্ব কমিটির তরফে এক সার্কুলার জারি হওয়ার পর এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পবিত্র হজ্ব ২০২০ নিয়ে গত ১৩ই মার্চের পর থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো দিকনির্দেশনা জানায়নি সৌদির হজ্ব কর্তৃপক্ষ। যার ফলে এবারের হজ্বযাত্রা নিয়ে এক অনিশ্চয়তার আবহ সৃষ্টি হয়েছে । ভারতীয় হজ কমিটির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ড. মকছুদ আহমদ খান সার্কুলার জারি করে বলেন, গত মার্চ মাসের পর থেকে সৌদির হজ্ব মন্ত্রক এবারের হজ্বযাত্রা নিয়ে আর কোনো নতুন নির্দেশনা জানায়নি। তাই এবারের হজ্বযাত্রা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। হাতে মাত্র আর কয়েক সপ্তাহ বাকি। প্রতিবছর এই সময় হজ্বযাত্রা নিয়ে প্রস্তুতি চলে চুড়ান্ত পর্যায়ে। প্রায় আড়াই মাস হলো, এখন অবধি হজ্ব সংক্রান্ত কোনো নতুন নির্দেশনা না পাওয়া যায় নি সৌদি সরকারের তরফে। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতীয় পূর্ণার্থীরা নিজের হজ্বযাত্রা বাতিল করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। ভারতীয় হজ্ব কমিটির এই শীর্ষ কর্তা জানান, ভারতীয় হজ্ব কমিটির ওয়েবসাইটে দেওয়া আবেদন প্রত্যাহার ফর্ম পূরণ করে জমা দিলেই বিনা কর্তনে একশো শতাংশ টাকা ফিরত সহ তাদের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হবে। ব্যাংক একাউন্টের বহি সহ আবেদন ফর্ম এই cei.hajcommittee@nic.in মেইলে প্রেরণ করার আহবান জানানো হয়েছে।
এদিকে সার্কুলেশনে সরাসরি ভারতীয়দের হজ্বযাত্রা ২০২০ বাতিল বলে ঘোষণা দেওয়া না হলেও এমন সার্কুলারে হজ্ব বাতিলের প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করছেন। আসন্ন হজ্ব পরিক্রমায় ভারত যে অংশগ্রহণ করছে না তাঁরও এক ইঙ্গিত বহন করছে এই নির্দেশনা।
প্রতিবছর হজ্ব উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো লাখো পুর্ণার্থী জমায়েত হন পবিত্র মক্কা-মদিনায়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব। এবারে অতিমারী করুণা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে তাবা বসিয়ে চলেছে। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যে মারাগেছেন কয়েকলক্ষ মানুষ। এই মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র দাওয়াই সামাজিক বা শারিরীক দুরত্ব। পবিত্র হজ্ব মৌসুমে লাখো মানুষের সমাগমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। এহেন পরিস্থিতিতে হজ্ব ২০২৯ সরাসরি বাতিল হলেও আশ্চর্যের কিছু থাকবে না। তবে হজ্ব বাতিলের খবরে বিষন্নতার চাপ দেখা যাবে হজ্বযাত্রীদের মধ্যে, এটা নিশ্চিত। ভারত থেকে এবারের প্রায় দেড় লাখ পূর্ণার্থী আবেদন জানিয়েছেন। এদের মধ্যে উত্তর পূর্ব ভারতের প্রায় চার হাজার হজ্বযাত্রী রয়েছেন। যারা ইতিমধ্যে জমা দিয়েছেন হজ্বের প্রথম কিস্তির টাকা। শেষ কিস্তির টাকা জমা নেওয়ার সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। অথচ হজ্ব কর্তৃপক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো নোটিফিকেশন না আসায় একটা সংশয় ছিল পূর্ণার্থীদের মনে। শুক্রবার আবেদন প্রত্যাহারের সার্কুলার জারি করে এই সংশয় আরও বাড়িয়ে তুলল ভারতীয় হজ্ব কমিটি। আখেরে এমন যদি হয়, তাহলে এটি ভারত সহ বিশ্বের তামাম পূর্ণার্থীদের জন্য বিরাট দুঃখের খবর।