Thursday, 20 August 2020

করোনা পজিটিভের সম্পর্কে থাকা কমরুলের টেস্ট করতে গিয়ে হামলার শিকার স্বাস্থ্যকর্মীরা, থানায় মামলা, ক্ষোভ এলাকায়


এইচ,এ চৌধুরী,  কাটিগড়া, ২০ আগষ্ট ঃ কাটিগড়া তৃতীয় খণ্ডের বাসিন্দা আঙ্গনওয়াদী কেন্দ্রের কর্মী কোভিড নাইনটিন পজিটিভ রোগী ছালেহা বেগম লস্করের সংস্পর্শের লোকদের সোয়াব টেস্ট করতে গিয়ে ছালেহার দেবর কমরুল ইসলাম লস্করের হাতে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হন একই গ্ৰামের বাসিন্দা তথা জলালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীন কর্মরত ব্লক প্রোগ্রাম মেনেজার (বিপিএম) বুরহানুল হক চৌধুরী। সঙ্ঘটিত সমুহ ঘটনার বিবরন জানিয়ে ছালেহার দেবর অভিযুক্ত কমরুলের বিরুদ্ধে ১৭ আগষ্ট সোমবার কাটিগড়া থানায় মামলা রুজু করছেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনস্থ কর্মী বিপিএম বুরহানুল হক চৌধুরী। মৃত এনামুল হক চৌধুরীর পুত্র বুরহানুল হক চৌধুরীর দেওয়া এজাহারের বয়ানমতে ঘটনার রবিবরনে প্রকাশ ১৬ আগষ্ট রবিবার জলালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ সুমন ভৌমিকের নির্দেশে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এমপিডব্লিউ কর্মী দীপক সাহা,স্থানীয় আশা কর্মী রোসনা বেগম সহ বিপিএম বুরহানুল হক চৌধুরী ও অন্যান্যরা কোভিড নাইনটিন পজিটিভ রোগী ছালেহার বাড়ির সংস্পর্শের লোকদের সোয়াব টেস্ট করতে  সালেহার বাড়িতে যান বিকাল আনুমানিক ৩ ঘটিকায়। আশা কর্মী রোসনা ও দীপক সাহা সহ অন্যান্যরা হোম আইসলেশনে থাকা কোভিড-পজিটিভ রোগী ছালেহার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ছালেহার সংস্পর্শের লোকদের রেপিড এণ্টিজেন্স টেস্টের মাধ্যমে সোয়াব টেস্টের কথা জানালে ছালেহার দেবর কমরুল প্রথমে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের জিজ্ঞাসা করে জানতে চায় কে বা কাহারা তার বাড়িতে তাদেরকে পাঠিয়েছে,জবাবে আশা কর্মী রোসনা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশের কথা শুনালে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে তৎসঙ্গে বিপিএম বুরহানুল হককে উদ্দেশ্যে করে নানা ধরনের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্মীদের সম্মুখে বুরহানুলকে মারধরের হুমকি দিয়ে রাখে কমরুল। এসময় বিপিএম বুরহানুল হক আশা কর্মী রোসনা সহ অন্যান্যদের সঙ্গে  ছালেহার বাড়িতে প্রবেশ করেন নাই। মুলত ডাক্তারের নির্দেশে সঙ্গে থাকা স্বাস্থ্য কর্মীদের ছালেহার বাড়ির পথ দেখিয়ে দিয়ে ছালেহার বাড়ি থেকে কিছু দূরবর্তী স্থানে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বুরহানুল। স্বাস্থ্যকর্মীরা এদিন ছালেহার বাড়িতে সোয়াব টেস্টর জন্য উপস্থিত হলে ছালেহার ঘরের লোকেরা প্রথমে সোয়াব টেস্ট করাতে রাজি হয় নাই,একসময় আশা কর্মী রোসনা ছালেহার পরিবারের লোকেদের বুঝিয়েসুজিয়ে ছালেহার  স্বামী ফয়জুর রহমান লস্কর সহ ছেলে,মেয়েদের সোয়াব টেস্ট করান এদিন, এতে ছালেহার ২ মেয়ের গায়ে কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে,যাহার পরিপেক্ষিতে ছালেহার দেবর কমরুলকে তার সোয়াব টেস্ট করাতে অনুরোধ জানায় আশাকর্মী রোসনা, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কমরুল নিজের গায়ের সোয়াব টেস্ট করার পরিবর্তে আশাকর্মী সহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে পুনরায় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে তৎসঙ্গে বিপিএম বুরহানুল হককে মারধর করার জন্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বুরহানুলকে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় পেয়ে  অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুরহানুলের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়,ঠিক ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্ৰোফ সদস্য স্থানীয় আলতাবুর রহমান ও খলিল উদ্দিন সহ অন্যান্যরা কমরুলের হাত থেকে বুরহানুলকে কোনক্রমে রক্ষা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করছেন বুরহানুল। বিপিএম বুরহানুলের উপর প্রাণঘাতী হামলা সহ স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহারের জেরে এমপিডব্লিউ কর্মী সংস্থার জেলা কমিটির তরফে স্বাস্থ্য বিভাগের জেলা যুগ্ম  সঞ্চালকের মাধ্যমে সমুহ ঘটনার বিবরন জানিয়ে কাছাড়ের জেলাশাসক সহ পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপির প্রদান করে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বলে জানা গেছে, উপরন্তু বুরহানুল হক চৌধুরীর উপর প্রাণঘাতী হামলা সহ স্বাস্থ্য কর্মীদের সহিত অভ্যভ্য আচরণকারী অভিযুক্ত কমরুলকে সত্তর গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংস্থা বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে বিপিএম বুরহানুল হক চৌধুরীর উপর প্রাণঘাতী হামলায় জড়িত অভিযুক্ত কমরুলের বিরুদ্ধে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কাটিগড়া থানার ওসি নয়ন মনি সিং এর কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন জলালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ সুমন ভৌমিক সহ কাটিগড়া মডেল হাসপাতালের উপ-অধিক্ষক ডাক্তার রত্মা চক্রবর্তী। একই ভাবে বিপিএম বুরহানুল হকের উপর প্রাণঘাতী হামলার দায়ে অভিযুক্ত কমরুলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসি নয়ন মনি সিনহাকে  নির্দেশ দিয়েছেন কাটিগড়ার সার্কেল মেজিষ্ট্রেট প্রাণজিত দেব বলে জানা গেছে। তবে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী বুরহানুল হকের দায়েরকৃত মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত করছে কাটিগড়া পুলিশ,যদিও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মামলার তদন্তের দায়ীত্বে থাকা এস,আই ডি শর্মা অভিযুক্ত কমরুলকে এখনও করায়াত্ত করতে পারেন নাই। এদিকে সঙ্ঘটিত ঘটনার ৪/৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বুরহানুলের উপর হামলাকারী অভিযুক্ত কমরুলকে গ্রেপ্তার না করায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী সহ স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

No comments:

Post a Comment

Thanks for your Valuable comment