হাজিদের কেউ করুণায় আক্রান্ত হন নি, সৌদির প্রশংসায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মূল্যবান সুগন্ধি দিয়ে হাজিদের বিদায়ী সম্ভাষণ হারামাইনের
রশিদ আহমদ তাপাদার
পবিত্র হজ পালনের সর্বশেষ কাজ " বিদায়ী তাওয়াফ" আদায়ের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের ব্যতিক্রমী হজ্ব পর্ব শেষ হলো রবিবার। লাগাতার তিনদিন তাবু নগরী মিনায় অবস্থান করে হাজিরা জামারায় পাথর নিক্ষেপ করেন। জামারা কমপ্লেক্সে দাড়িয়ে করুণা বিধি পালন করে এক সঙ্গে পঞ্চাশ জন হাজি পাথর নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা করে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। মোড়ানো ব্যাগে আগে থেকেই হাজিদের কাছে পাথর সরবরাহ করা হয় সরকারি ভাবে। নির্ধারিত স্থানে পাথর নিক্ষেপ করার রবিবার ছিল শেষ দিন। এদিন তারা শেষ দিনের পাথর নিক্ষেপ করে পবিত্র মক্কানগরীতে উপস্থিত হন "তাওয়াফুল বিদা" আদায় করার জন্য।
বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, তাওয়াফুল বিদা আদায় না করে কেউ যেন চলে না যায়। হাজিরা এই শেষ তাওয়াফ আদায় করতে মক্কাশরীফে উপস্থিত হলে হারামাইন শরীফের প্রেসিডেন্সি বিভাগ হাজিদের মুল্যবান সুগন্ধি আর বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিয়ে সম্ভাষণ জানায়। আল আরাবিয়ার সুত্রে জানাগেছে, বিদায়ী তাওয়াফ সেরে হাজিরা মক্কা ত্যাগ করতে শুরু করেন। আর এভাবেই করুণা মহামারি রোধে সীমিত হজ্ব ২০২০ সালের আসর শেষ হলো ইতিহাসের স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে।
তবে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো, হাজিদের কেউ করুণা বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত হন নি। এখবর নিশ্চিত করেছে আরব নিউজ। সৌদি সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র মুহাম্মদ আব্দুল আলী এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সর্বশেষ রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত করুণা ভাইরাস হাজিদের মধ্যে তাবা বসাতে পারে নি। তিনি বলেন, হাজিদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল সৌদি সরকার। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রায় দেড় হাজার বিছানা যুক্ত হাসপাতাল গড়ে তুলা হয়। দুই শ ৭২ টি আইসিউ, তিন শ ৩১ টি আইসোলেশন কেন্দ্র ও দুই শতাধিক জরুরি সেবা কেন্দ্র প্রস্তুত ছিল হাজিদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। বিশেষ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে কাবা ঘর, মসজিদে হারাম, সাফা মারওয়া, আরফা ময়দান ইত্যাদি বিভিন্ন স্থান জীবাণুনাশক পদার্থ দিয়ে লাগাতার জীবাণু মুক্ত করা হয়। শুধুমাত্র পবিত্র কাবা ঘর ও মসজিদে হারাম প্রতিদিন দশবার সেনিটাইজ করা হয়েছে বলে সুত্রের খবর।
এদিকে করুণা মুক্ত হজ্ব আয়োজন করায় সৌদি সরকারের প্রশংসা করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৈশ্বিক মহামারি করুনারোধে এবারের হজে সৌদির ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য বিভাগ ছিল খুবই তৎপর। সীমিত হজ আসরে হাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করে সৌদির স্বাস্থ্য বিভাগ। কঠোর স্বাস্থ্য বিধি মেনে যাতায়াতের ব্যবস্থা, নিরাপদ দুরত্ব, মাস্ক ব্যবহার, নির্দিষ্ট লাইনে চলাচল এই সমূহ করুণা বিধি নিশ্চিত করা হয়েছে এবারের হজ্বে। ছিল নানা রকম বিধি-নিষেধ। হাজিদের স্বাস্থ্যবিধি পালন ও সামজিক দুরত্ব পর্যবেক্ষণে বেশ সচেতন ছিলেন কর্তৃপক্ষ। যারফলে করুণামুক্ত হজ আয়োজন করতে পেরেছে সৌদি সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, সৌদি আরবের গৃহীত পদক্ষেপ করুণা ভাইরাস রোধে সর্বোত্তম ভুমিকা পালন করেছে।
খুব ভালো
ReplyDeleteGood
ReplyDelete